Madhyamik Geography Suggestion 2024 | মাধ্যমিক ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ সাজেশন ২০২4

Published On:

Madhyamik geography ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ
মাধ্যমিক ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ সাজেশন ২০২4 

Madhyamik Geography Suggestion 2024 মাধ্যমিক ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ সাজেশন ২০২4 যদি যদি কোন কিছু বাদ পড়ে যায় তাহলে কিন্তু তোমরা অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে জানাবে। আমরা এই যে সাজেশন তৈরি করে দিলাম এটা কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ সমস্ত পরীক্ষার্থীদের জন্য তো অবশ্যই কিন্তু full সাজেশনটা আপনারা কমপ্লিট করে নেবেন কারণ সমস্ত প্রশ্ন মাথায় রেখে এই সাজেশনটা তোমাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে নিচে পিডিএফও দেওয়া রয়েছে অবশ্যই তোমরা পিডিএফ তাকে করে নেবে এবং তোমাদের বন্ধু-বান্ধবের সাথে অবশ্যই শেয়ার করে দেবে। Madhyamik ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ Geography Suggestion 2024

যদি কারো কোন কিছু জানার থাকে বা বলার থাকে অবশ্যই নিজের কমেন্ট বক্সটিতে ক্লিক করে কমেন্ট করে দেবেন তাহলে আমাদেরও বুঝতে সুবিধা হবে কার কোথায় অসুবিধা রয়েছে বা সুবিধা হচ্ছে। Madhyamik Geography Suggestion 2023

আশা করব সম্পূর্ণ সাজেশনটা তোমাদের খুব কাজে আসবে তাই অনেক কষ্ট করে এই সাজেশনটা বানানো হয়েছে।

Madhyamik Geography Suggestion 2023 দেবে তাদের জন্য কিন্তু এই অংকে সাজেশনটা তৈরি করা হয়েছে। ২০২৩ এর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের যদি আরও কোন সাজেশন লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করুন বা আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন এবং সার্চ বক্সে আপনি আপনার প্রশ্নটি লিখুন দেখবেন তার উত্তর নিচে আপনারা পেয়ে যাবেন এবং সমস্ত সাবজেক্টের সাজেশন প্রশ্ন উত্তর পাওয়ার জন্য আমাদের ওয়েব পেজটাকে বুক মার্ক করে রাখুন তাতে তোমাদের সুবিধা হবে।

চাইলে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলেও যুক্ত হতে পারো টেলিকম চ্যানেলের লিংক নিচে দেওয়া রয়েছে ধন্যবাদ। Madhyamik Geography Suggestion 2023

Madhyamik Geography Suggestion ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ 2024

মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024 – Madhyamik Geography Suggestion 2024 বহুৰিকল্পভিত্তিক প্রশ্ন

প্রশ্নমান – ২
1. খাদ্য ফসল কাকে বলে?
উত্তর : খাদ্য হিসাবে উৎপাদনের জন্য যে সকল ফসলের চাষ হয় তাকে খাদ্য ফসল বলে।

2. অর্থকরী ফসল কাকে বলে?
উত্তর : প্রধানত অর্থ উপার্জনের জন্য কৃষকেরা যে সব ফসলের চাষ বা উৎপাদন করে, তাকে বলে অর্থকরী ফসল।
⦿ উদাহরণ : পাট, তুলা।

3. বাগিচা ফসল কাকে বলে?
উত্তর : ক্ষুদ্র, মাঝারি, বিশালায়তন বাগিচা তৈরি করে মূলত জলবায়ুর উপর নির্ভর করে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিবিদ্যার সাহায্যে শ্রম নিবিড় পদ্ধতিতে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে শস্য বা ফসল উৎপাদনকে বাগিচা ফসল বলে।
⦿ উদাহরণ : চা, আপেল, কমলালেবুচাষ।

4. খারিফ শস্য কাকে বলে?
উত্তর : বর্ষা কালে বৃষ্টির জলের উপর নির্ভর করে যে ফসলের চাষ করা হয় তাদের খারিফ শস্য বলে। সাধারণত মে-জুলাই মাসে এই শস্য বপন করা হয় এবং সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে কাটা হয়।
⦿ উদাহরণ : ধান, জোয়ার, বাজরা, ভুট্টা, তুলো, আঁখ, সয়াবিন, চীনাবাদাম।

5. রবিশস্য কাকে বলে?
রবি শস্য : এককথায় রবিশস্যের অর্থ হল শীতকালীন ফসল’। প্রধানত জলসেচের ওপর নির্ভর করে শীতকালে যেসব ফসলের চাষ করা হয় সেইসব ফসলকে রবি ফসল বলে।
⦿ উদাহরণ : গম, যব, আলু, বিভিন্ন রকমের তৈলবীজ ও ডাল রবি ফসলের উদাহরণ।

6. জায়িদ শস্য কাকে বলে?
উত্তর : যে সব ফসল গ্রীষ্মঋতুতে চাষ করা হয় এবং বর্ষার প্রারম্ভে তোলা হয়, তাকে জায়িদ বা গ্রীষ্মকালীন শস্য বলে।
⦿ উদাহরণ : কুমড়ো, শশা, পটল, তরমুজ।

7. পশ্চিমবঙ্গের ধানের গোলা’ কাকে বলে ও কেন? ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ
উত্তর :

9. বিশুদ্ধ কাঁচামাল কাকে বলে?
উত্তর : যে সমস্ত কাঁচামাল শিল্পজাত দ্রব্যে পরিণত হওয়ার পর শিল্পজাত দ্রব্যের ওজন বিশেষ কমে না, তাদের বিশুদ্ধ শ্রেণীর কাঁচামাল বলা হয়।
⦿ উদাহরণ : তুলাে, পাট ইত্যাদি। কিছু অবিশুদ্ধ কাঁচামালের উদাহরণ হল আখ, আকরিক লােহা প্রভৃতি।

10. অবিশুদ্ধ কঁচামাল কাকে বলে?
উত্তর : যে সমস্ত কাঁচামাল শিল্পজাত দ্রব্যে পরিণত হওয়ার পর শিল্পজাত দ্রব্যের ওজন কাঁচামালের ওজনের থেকে হ্রাস পায়, তাদের অবিশুদ্ধ শ্রেণীর কাঁচামাল বলে।
⦿ উদাহরণ : আখ, আকরিক লােহা প্রভৃতি। বিশুদ্ধ শ্রেণীর কাঁচামালের উদাহরণ হল তুলাে, পাট প্রভৃতি।
11. কৃষিভিত্তিক শিল্প কাকে বলে?
উত্তর : কৃষিজ ফসলের উপর নির্ভর করে যে শিল্প গড়ে ওঠে, সেই শিল্পকে কৃষিভিত্তিক শিল্প বলে।
উদাহরণ : পাট ও তুলাে থেকে যথাক্রমে পাটশিল্প ও বস্ত্রবয়ন শিল্প গড়ে ওঠে। এ ছাড়া, আখ থেকে গড়ে ওঠা চিনি শিল্পও কৃষিভিত্তিক শিল্পের উদাহরণ। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

12. খনিজভিত্তিক শিল্প কাকে বলে?
উত্তর : নানা ধরনের খনিজ পদার্থকে যে শিল্পে কঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়, সেইসব শিল্পকে খনিজভিত্তিক শিল্প বলে।
উদাহরণ : লােহা ও ইস্পাত শিল্প, সিমেন্ট শিল্প, তামা নিষ্কাশন শিল্প, অ্যালুমিনিয়াম শিল্প প্রভৃতি।

13. দ্রব্যসূচক কাকে বলে?
উত্তর : মোট কাঁচামালের ওজন ও মোট উৎপাদিত দ্রব্যের ওজনের অনুপাতকে দ্রব্যসূচক বা বস্তুসূচক বা পণ্যসূচক বলে। পণ্যসূচকের মান 1 – এর কম হলে বিশুদ্ধ আর 1 এর বেশি হলে অবিশুদ্ধ হয়।

14. শিকড় আলগা শিল্প কাকে বলে?
উত্তর : বিশুদ্ধ কাঁচামাল নির্ভর শিল্প গুলি ক্ষেত্রে পরিবহনের গুরুত্ব হওয়ায় শিল্প যে কোন জায়গাতে অর্থাৎ বাজারে অথবা কাঁচামালের উৎস কেন্দ্রে ও এদের মধ্যবর্তী যেকোন জায়গায় গড়ে উঠতে পারে তাই এই ধরনের শিল্পকে শিকড় আলগা শিল্প বা অস্থানু শিল্প বা Foot loose Industry বলা হয়।

15. লৌহ ইস্পাত শিল্পকে সকল শিল্পের মূল বা মেরুদন্ড বলা হয় কেন?
উত্তর : শিল্প একটি প্রযুক্তিনির্ভর জটিল প্রক্রিয়া, যার জন্য প্রাথমিকভাবে কিছু অত্যাবশ্যকীয় উপাদান প্রয়োজন হয়; এগুলি হলো পর্যাপ্ত কাঁচামালের যোগান, উপযুক্ত পরিকাঠামো, আধুনিক প্রযুক্তি, দক্ষ ও সুলভ শ্রমিক, উন্নত পরিবহন, বিশাল বাজার প্রভৃতি। এই সকল উপাদানগুলি সংশ্লিষ্ট শিল্পের স্থাপন ও উন্নতিকে নিয়ন্ত্রণ করে। এখানে আমাদের মনে রাখতে হবে যে, উল্লিখিত উপাদানগুলির মধ্যে পরিকাঠামো ও পরিবহন এই দুটি শর্তের প্রধান উপকরণ হলো লৌহ-ইস্পাত, যা উৎপাদিত হয় লৌহ-ইস্পাত শিল্প থেকে। অতএব, যে কোনও শিল্পের স্থাপন ও উন্নতির জন্য লৌহ-ইস্পাত তথা লৌহ-ইস্পাত শিল্পের ভূমিকা অপরিসীম। তাই লৌহ ইস্পাত শিল্পকে সকল শিল্পের মূল বা মেরুদন্ড বলা হয়। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

16. অনুসারী শিল্প কাকে বলে?
উত্তর : কোনো বৃহদায়তন শিল্পের উপর ভিত্তি করে যখন পাশাপাশি অসংখ্য ছোটো শিল্প গড়ে ওঠে, তাকে অনুসারী শিল্প বলে।
⦿ উদাহরণ : পেট্রোরসায়ন শিল্পে উৎপাদিত দ্রব্যের উপর ভিত্তি করে হলদিয়াতে অনেক অনুসারী শিল্পের বিকাশ ঘটেছে।

17. পেট্রো-রসায়ন শিল্পকে আধুনিক শিল্পদানব বলে কেন?
উত্তর : সমস্ত অনুসারী শিল্পকে নিয়ে পেট্রোরসায়ন শিল্প একত্রে বৃহদায়তন দানবের ন্যায় বিশাল শিল্পাঞ্চলে পরিণত হয়, বহু শিল্পকে উপকরণ সরবরাহ এবং বহু শিল্পকে গ্রাস করার জন্য পেট্রোরসায়ন শিল্পকে আধুনিক শিল্প দানব বলা হয়।

18. তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প কাকে বলে? ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ
উত্তর : কম্পিউটার ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার সাহায্যে বিভিন্ন প্রকার তথ্য সংগ্রহ, সঞ্চয়, বিশ্লেষণ, পরিমার্জন প্রভৃতি কাজ যখন শিক্ষা, ব্যবসায়িক প্রয়োজনে, জলবায়ুবিশ্লেষণে ব্যবহার করা হয় তখন তাকে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প বলে। মানবসম্পদ অর্থাৎ মানুষের মেধার ওপর ভিত্তি করে যেসব শিল্প গড়ে উঠেছে তার মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প হল অন্যতম।

19. আউটসোর্সিং কী?
উত্তর : সস্তা , সুলভ ও দক্ষ শ্রমিকের সাহায্যে বহুজাতিক সংস্থাগুলির ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাজ করিয়ে নেওয়ার পদ্ধতিকে বলা হয় আউট সোর্সিং।

20. জনঘনত্ব কাকে বলে?
উত্তর : ভূপৃষ্ঠের কোনাে অঞ্চলের মানুষের বণ্টনগত তারতম্যের সূচক হল জনঘনত্ব। কোনাে দেশ বা অঞ্চলের মােট জনসংখ্যাকে ওই অঞলের মােট জমির আয়তন দিয়ে ভাগ করলে যে অনুপাত পাওয়া যায়, তাকে জনঘনত্ব (density of population) বলে।
বৈশিষ্ট্য : 1. জনঘনত্ব প্রতি বর্গকিমিতে প্রকাশ করা হয়। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ
2. এর সাহায্যে জমির ওপর জনসংখ্যার চাপ বােঝা গেলেও অধিবাসীদের জীবনযাত্রার গুণগতমান বােঝা যায় না।

⦿ উদাহরণ : 2011 সালে ভারতের জনসংখ্যা ছিল 121.02 কোটি।

21. আদমশুমারি বলতে কী বোঝো?
উত্তর : কোনো দেশে একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর (সাধারণত ১০ বছর অন্তর) দেশের জনসংখ্যার , বিভিন্ন দিক যেমন সামাজিক ও আর্থিক স্থিতি জানার জন্য যে সার্ভে করা হয়, তাকেই আদমশুমারি বলে।

22. ধারণযোগ্য উন্নয়ন বলতে কী বোঝো?
উত্তর : ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিজস্ব চাহিদা মেটানোর ক্ষমতা বজায় রেখে বর্তমান প্রজন্মের চাহিদা মেটানোকে স্থিতিশীল উন্নয়ন বা ধারণযোগ্য উন্নয়ন বলা হয়। 1987 খ্রিস্টাব্দে ব্রুন্ডল্যান্ড কমিশনের রিপোর্টের সর্বপ্রথম স্থিতিশীল উন্নয়ন শব্দদ্বয় ব্যবহার করা হয়। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

23. এজেন্ডা-21 কী?
উত্তর : “এজেন্ডা -21” সমগ্র বিশ্বের পরিবেশের উন্নয়নের জন্য এটি একটি বন্ধনহীন ও স্বেচ্ছাধীন কার্যসূচি যা একুশ শতকের বিশ্বের প্রকৃত ধারণযোগ্য উন্নয়নের জন্য 1992 খ্রিস্টাব্দে 3 থেকে 14ই জুন ব্রাজিলের রিও-ডি জেনিরো শহরে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের পরিবেশ ও উন্নয়নের জন্য অনুষ্ঠিত সম্মেলনে (United Nations Conference For Environment And Development – UNCED) বা বসুন্ধরা সম্মেলনে গৃহীত হয়।এতে 225টি দেশের বিভিন্ন সরকারি ও 2400 বেসরকারি সংগঠন যোগ দান করেছিলেন।

25. মহানগর বা মেগাসিটি কাকে বলে? ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ
উত্তর : বড় কোন শহরে এক কোটি কিংবা তার বেশি জনসংখ্যা বাস করলে তখন ওই শহরটিকে মেগাসিটি বলে।
26. নগরায়ণ কাকে বলে?
উত্তর : কোনাে একটি স্থানে নগর সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে বা জনসংখ্যাগত দিক থেকে শহরের আয়তন বৃদ্ধিজনিত প্রক্রিয়াকে নগরায়ণ (Urbanisation) বলা হয়। গ্রাম বসতি কিংবা অনুন্নত শহর থেকে মানুষ যখন জীবিকার সন্ধানে বা বিলাসিতার কারণে, শিক্ষাগ্রহণের কারণে কিংবা আর্থসামাজিক কারণে কোনাে শহরে গিয়ে বসবাস করে সেখানকার জনসংখ্যাকে দ্রুত বৃদ্ধি করে এবং জনসংখ্যার বেশিরভাগ মানুষ দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের অর্থনৈতিক কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত হয়, তখন তাকে নগরায়ণ বলা হয়।

27. ই-মেল কী? ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ
উত্তর : কম্পিউটারের সাহায্যে কোনো তথ্য বা সংবাদ অন্য কোথাও পাঠানো বা গ্রহণ করার ব্যবস্থাই হলো ই- মেইল।

28. শিপিং লাইন ও শিপিং লেন কী?
⦿ শিপিং লাইন : সমুদ্রে যে সমস্ত কোম্পানির জলযান চলাচল করে, তাকে বলে শিপিং লাইন।
⦿ উদাহরণ : Shipping Corporation of India (ভারত)।

⦿ শিপিং লেন : সমুদ্রের যে পথ ধরে জাহাজগুলি চলাচল করে, তাকে শিপিং লেন বলে।
⦿ উদাহরণ : আটলান্টিক, পানামা খাল। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

29. পশ্চাদভূমি কী?
উত্তর : কোনো দ্রব্য কোনো বন্দরের মাধ্যমে যখন রপ্তানি করা হয় এবং ওই বন্দরের মাধ্যমে আমদানিকৃত পণ্য দ্রব্য যে অঞ্চল দিয়ে রপ্তানি করা হয় তাকে বলে পশ্চাদভূমি।

30. হীরক চতুর্ভূজ কী?
উত্তর : ভারত সরকার 2014 – 2015 সালের অর্থবর্ষের রেল বাজেটে চারটি মেট্রোপলিটন (দিল্লি, কলকাতা, চেন্নাই, মুম্বাই) মধ্যে উচ্চগতি সম্পন্ন ট্রেন চালালে প্রকল্প গ্রহণ করেছে। একে হীরক চতুর্ভূজ বলে।

31. পুনঃরপ্তানি বন্দর কী?
উত্তর : যে বন্দরের মাধ্যমে বিভিন্ন আমদানিকৃত পণ্যসামগ্রী নিজেদের দেশীয় চাহিদা পুরণ করা ছাড়াও অন্য দেশে রপ্তানি করা হয়, তাকে বলা হয় পুনঃরপ্তানি বন্দর।
যেমন – লন্ডন বন্দর ভারত ও শ্রীলঙ্কা থেকে চা আমদানি করে এবং অন্য দেশে রপ্তানি করে। তাই লন্ডন হল পুনঃরপ্তানি বন্দর।

32. পরিপুরক বন্দর কী?
উত্তর : কোনো বন্দরের গভীরতা কোনো কারণে কমে গেলে যদি বড়ো বড়ো জাহাজ প্রবেশ করতে না পারে সেক্ষেত্রে সেই বন্দরের সুবিধার জন্য তার কাছেই কোনো বন্দর গড়ে তোলা যায়। তখন সেই বন্দরে বড়ো বড়ো জাহাজগুলিতে মাল বোঝাই করা হয় বা বন্দরে আসা এই ওইরকম জাহাজ থেকে মাল খালাস করা হয়। এরুপ বন্দরকে সহযোগী বা পরিপুরক বন্দর বলে।
যেমন — কালী নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় কলকাতা বন্দরের পরিপূরক বন্দর রূপে হলদিয়া বন্দর গড়ে উঠেছে।

Madhyamik History Suggestion 2023

ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ প্রশ্ন উত্তর – মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024 – Madhyamik Geography Suggestion 2024
অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরখমী প্রশ্ন : (প্রশ্নমান-3)


প্রশ্নমান – ৩

1. অসমে অধিক চা চাষ হয়ে থাকে কেন?
উত্তর : অসম চা চাষে উন্নত হওয়ার কারণ: ভারতে সবচেয়ে বেশি চা উৎপাদিত হয় অসম রাজ্যে। চা চাষে অসমের উন্নতির কারণগুলি হল —

1. অনুকূল জলবায়ু : চা মৌসুমি জলবায়ু অঞ্চলের কৃষিজ ফসল। এই রাজ্যে বছরে প্রায় 200 সেমি বৃষ্টিপাত হয় এবং 20°সে-30°সে তাপমাত্রা বিরাজ করে, যা চা উৎপাদনে যথেষ্ট সহায়ক। এ ছাড়া, এই অঞ্চলে প্রায় প্রতি মাসেই কমবেশি বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

2. ঢালু ভূমিভাগ : এই রাজ্যের অধিকাংশ স্থানের ভূমিভাগ উঁচুনীচু ও ঢালু। এই ধরনের ঢালু জমি চা চাষের উপযােগী।

3. উপযুক্ত মুক্তিকা : অসমের বেশিরভাগ জায়গায় আছে অম্লধর্মী পলি ও মাটি। এই মাটি চা চাষের পক্ষে আদর্শ।

4. অন্যান্য কারণ : বিনিয়ােগকারীরা অসমের চা বাগিচাগুলিতে প্রচুর মলধন বিনিয়ােগ করেছে। এ ছাড়া, গুয়াহাটি চা নিলাম কেন্দ্র, নিকটবর্তী কলকাতা বন্দরের সুবিধা, উন্নত পরিকাঠামাে প্রভৃতি অসমে চা চাষের উন্নতি ঘটিয়েছে।

3. দুর্গাপুরকে ‘ভারতের রুঢ়’ বলা হয় কেন? ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

উত্তর : জার্মানির বিখ্যাত রাইন নদীর একটি ক্ষুদ্র উপনদী হল রূঢ়। এই রূঢ় উপত্যকায় উন্নতমানের কয়লা পাওয়া যায়। এই কয়লা খনিকে কেন্দ্র করে রূঢ় উপত্যকায় বড়ো বড়ো লৌহইস্পাত, ভারী যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন প্রভৃতি কারখানা গড়ে উঠেছে। সমগ্র অঞ্চলটি রূঢ় শিল্পাঞ্চল নামে খ্যাত। দামোদর উপত্যকার রাণীগঞ্জ, অন্ডাল, দিশেরগড়, প্রভৃতি খনিকে কেন্দ্র করে নিকটবর্তী দুর্গাপুরেও লৌহ ইস্পাত, ভারী যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক সার প্রকৃতি কারখানা গড়ে উঠেছে। এ জন্য দুর্গাপুর কে ভারতের রূঢ় বলা হয়।
4. আমেদাবাদকে ভারতের ম্যাঞ্চেস্টার’ বলে কেন?

উত্তর : ইংল্যান্ডের ল্যাঙ্কাশায়ার শহরের ম্যাঞ্চেস্টারে আমদানিকৃত তুলার উপর ভিত্তি করে অসংখ্য বস্ত্রশিল্প গড়ে উঠেছে। ঠিক তেমনি ভারতের গুজরাট রাজ্যের আমেদাবাদ শহরে স্থানীয় তুলার উপর ভিত্তি করে অসংখ্য বস্ত্রশিল্প গড়ে উঠেছে। তাই আমেদাবাদকে বলা হয় ভারতের ম্যাঞেস্টার।
5. ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সড়কপথের গুরুত্ব কতখানি? ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

আড়ও পড়ুন:- Madhyamik Suggestion 2024

 


ারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সড়কপথের গুরত্ব : ভারতের মতাে উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে সড়কপথের গুরুত্ব খুব বেশি সেগুলি হল —

1. গ্রামীণ উন্নতিতে : ভারতের শতকরা 69 শতাংশ মানুষ গ্রামে বাস করে। কৃষিজ ফসল বিক্রয় এবং শহর থেকে সার, কীটনাশক, কৃষিযন্ত্রপাতি প্রভৃতি কৃষিক্ষেত্রে আনা ও অন্যান্য বাণিজ্যিক কারণে সড়কপথের গুরুত্ব খুব বেশি। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

2. কাঁচামাল সংগ্রহ : গ্রাম থেকে কৃষিজ কাঁচামাল শিল্পকেন্দ্রে নিয়ে আসা বা খনি থেকে কয়লা এবং খনিজ পদার্থ শিল্পকেন্দ্রে পাঠানাের ব্যবস্থা সড়কপথের মাধ্যমেই ভালাে হয়। যেমন — রানীগঞ্জ আসানসােল থেকে জাতীয় সড়কপথে কয়লা হুগলি শিল্পাঞ্চলে এসে পৌঁছায়।

3. পাবর্ত্য অঞ্চলে উন্নতির জন্য : উত্তর ভারত, উত্তর-পূর্ব ভারত বা দাক্ষিণাত্যের পার্বত্য অঞ্চলে যেখানে রেল পরিবহণ উন্নত নয় সেখানে সড়কপথ পরিবহণের মাধ্যমেই আঞ্চলিক উন্নয়ন সম্ভব। তাই ওইসব অঞ্চলে সড়কপথে গুরুত্ব খুব বেশি।

4. নির্মাণ ব্যয় কম : রেলপথের তুলনায় সড়কপথের নির্মাণ ব্যয় কম। তাই ভারতের মতাে দেশে সড়কপথের বিকাশ হলে অর্থনীতির ওপর কম চাপ পড়ে। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

6. সোনালি চতুর্ভুজ বলতে কী বোঝো?

⦿ সংজ্ঞা : ভারতের প্রধান চারটি মহানগর যথা – মুম্বাই, দিল্লি, কলকাতা ও চেন্নাই – কে ছয় লেনবিশিষ্ট (স্থানবিশেষে চার লেন) প্রায় ৫৮৪৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যসম্পন্ন সড়কপথ দ্বারা যুক্ত করা হয়েছে। এটিই সোনালি চতুর্ভুজ (Golden Quadrilateral) নামে পরিচিত। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

⦿ পরিচিতি : এটি কেন্দ্রীয় সরকার গৃহীত ও পরিচালিত একটি প্রকল্প। এই পরিকল্পনাটি গ্রহণ করা হয়েছিল ১৯৯৯ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাননীয় অটলবিহারী বাজপেয়ীর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে, কাজ শুরু হয়েছিল ২০০১ সালে এবং শেষ হয়েছিল ২০১২ সালে। এই সড়কপথটি ভারতের জাতীয় মহাসড়ক কর্তৃপক্ষ (NHAI)

⦿ গুরুত্ব : সোনালি চতুর্ভুজ (Golden Quadrilateral) প্রকল্পের গুরুত্বগুলি হল – ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

1. এই প্রকল্প দেশের মুখ্য শহর ও বন্দরগুলির মধ্যে দ্রুত পরিবহন ব্যবস্থা স্থাপন করেছে।
2. ছোট শহরগুলি থেকে সহজে বাজার অঞ্চলে পৌছানোর ব্যবস্থা সহজ হয়েছে।
3. দ্রুত পরিবহনের ফলে কৃষিজাত ফসল বাজারজাতকরণে সুবিধা হয়েছে এবং ফসলের পচন ও অপচয়রোধ অনেকাংশে কমানো সম্ভব হয়েছে।
4. শিল্পের প্রসার ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেয়েছে।
5. শহর ও বন্দরের সরবরাহ অঞ্চলের আয়তন বৃদ্ধি পেয়েছে।
7. আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার গুরুত্বগুলি উল্লেখ করো। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

⦿ আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার গুরুত্ব : এককথায় যোগাযোগ বলতে বোঝায় মানুষের কথাবার্তার পারস্পরিক আদানপ্রদান। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণপরিসেবামূলক কাজ, ইংরেজি শব্দ ‘Communication’-এর উৎপত্তি হয় লাতিন শব্দ ‘Communicare যার অর্থ অংশীদার হওয়া বা করা এবং এই ধরনের একটি সংগঠিত আদানপ্রদান-এর ব্যবস্থাকে বলে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার প্রধান মাধ্যম হল তিনটি : ইনটারনেট, ই-মেল ও সেল ফোন।

1. কম্পিউটারের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা : কম্পিউটার হল এক বিশেষ ধরনের বৈদ্যুতিন যন্ত্র যার সাহায্যে বর্তমান যুগে যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রভূত উন্নতিসাধন হয়েছে। ইলেকট্রনিক মেল বা ই-মেল (Email) এবং ইনটারনেট ইত্যাদি ব্যবস্থার মাধ্যমে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে যোগাযোগ স্থাপন করা যাচ্ছে। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

2. ইনটারনেট ও ই-মেল : সমগ্র বিশ্বজুড়ে একাধিক কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মধ্যে পারস্পরিক সংযােগ ব্যবস্থাই হল ইনটারনেট ব্যবস্থা। বর্তমানে বিশ্বের অধিকাংশ দেশই এই ইনটারনেট ব্যবস্থার সাহায্যে পরস্পর যুক্ত থেকে নিমেষের মধ্যে তথ্য, খবরাখবর এবং মতামত বিনিময় করে চলেছে। দ্রুত, সহজে এবং স্বল্প ব্যয়ে যােগাযােগ সাধনের এটি অন্যতম মাধ্যম। বর্তমানে ইনটারনেটে ফেসবুক, হােয়াটসঅ্যাপ, টুইটার প্রভৃতি সােশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলির মাধ্যমে পারস্পরিক যােগাযােগ খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ই-মেলের মাধ্যমে অতি অল্প খরচে দ্রুত পৃথিবীর যে কোনাে স্থানে সংবাদ পাঠানাে যায়। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ই-মেল ব্যবস্থা চালু হয়।

3. মোবাইল বা সেলফোন : শুধু দুজন মানুষের মধ্যে কথা বলার সুবিধাই নয়, মােবাইল বা সেলুলার ফোনের সাহায্যে SMS, MMS, মােবাইল। ব্যাংকিং প্রভৃতি বিচিত্র ধরনের পরিসেবা একে একটি অত্যন্ত প্রয়ােজনীয় ও অপরিহার্য যােগাযােগের মাধ্যমে পরিণত করেছে।

8. ইন্টারনেট পরিষেবার গুরুত্বগুলি উল্লেখ করো। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ
অথবা,
ইন্টারনেটের গুরুত্ব কী?
আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হল ইন্টারনেট।

⦿ ইন্টারনেট পরিষেবার গুরুত্ব : ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ
i. ইন্টারনেট ব্যবস্থার মাধ্যমে খুব দ্রুত সংবাদ পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে পৌঁছে দেওয়া যায়।
ii. এই ব্যবস্থা প্রচলনের ফলে শিল্প সংস্কৃতির জগতে নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে।
iii. এই ব্যবস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে পৃথিবীর যে-কোনো তথ্য সংরক্ষিত থাকে।
iv. শিল্পক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছে।
v. এই ব্যবস্থার বর্তমান দিনে রেল ও বিমানের টিকিট, টেলিফোন, ইলেকট্রিক বিল জমা, কলেজে ভরাতির ফর্মপূরণ ঘরে বসেই করা যায়।
9. হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল জনবিরল কেন?

⦿ হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল জনবিরল হওয়ার ভৌগােলিক কারণ : হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের বিস্তীর্ণ অঞ্চল বিরল এবং অতিবিরল জনবসতি অঞ্চলের অন্তর্গত। এখানকার গড় জনঘনত্ব প্রতি বর্গকিমিতে 100 জনেরও কম। এই অঞ্চলটি জনবিরল হওয়ার কারণগুলি হল —

1. উঁচুনীচু পর্বতময় ভূপ্রকৃতি : হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের বেশিরভাগ স্থানের ভূপ্রকৃতি পর্বতময় ও বন্ধুর। মানুষের পক্ষে এখানে বিভিন্ন অর্থনৈতিক কাজকর্ম গড়ে তােলা অসুবিধাজনক।

2. অনুর্বর মত্তিকা : এই অঞ্চলের বেশিরভাগ মৃত্তিকা অনুর্বর এবং অগভীর। তাই উন্নতমানের কৃষিকাজের পক্ষে উপযুক্ত নয়। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

3. শীতল জলবায়ু : হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের শীতকালীন জলবায়ু জীবনধারণের পক্ষে সুবিধাজনক নয়।

10. গাঙ্গেয় সমভূমি অত্যন্ত জনবহুল কেন? ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

⦿ গাঙ্গেয় সমভূমি অত্যন্ত জনবহুল হওয়ার কারণ : গাঙ্গেয় সমভূমি ভারতের সবথেকে জনবহুল অঞ্চল। এখানকার গড় জনঘনত্ব প্রতি বর্গকিমিতে 980 জনের বেশি। যেসব কারণগুলির জন্য অঞ্চলটি অত্যন্ত জনবহুল সেগুলি হল —

1. সমতল ভূপ্রকৃতি : গাঙ্গেয় সমভূমিটিতে ভূমির বন্ধুরতা একেবারেই নেই। এখানকার সমতল ভূপ্রকৃতি কৃষিকাজ, পরিবহণ ও শিল্পস্থাপনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করেছে।

2. অনুকূল জলবায়ু : এই অঞ্চলটির উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাত মধ্যম প্রকৃতির। এইরূপ জলবায়ু কৃষিকাজ ও অধিবাসীদের জীবনধারণের পক্ষে অনুকূল।

3. উর্বর মৃত্তিকা : এখানকার মৃত্তিকা খুব উর্বর। এই মৃত্তিকায় ধান, গম, পাট, আখ, তৈলবীজসহ বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন খুব বেশি হয়। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ
11. অরুণাচল প্রদেশে জনঘনত্ব কম কেন?

⦿ অরুণাচল প্রদেশের জনঘনত্ব কম হওয়ার কারণ : ভারতের সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে অরুণাচল প্রদেশের জনবসতির ঘনত্ব সবথেকে কম। এখানে প্রতি বর্গকিলােমিটারে 17 জন লােক বসবাস করে। এই রাজ্যটির জনঘনত্ব এরূপ কম হওয়ার পিছনে বেশ কিছু প্রাকৃতিক ও আর্থসামাজিক কারণ রয়েছে, যেমন –

1. বন্ধুর ও পর্বতময় ভূপ্রকৃতি : এখানকার বেশিরভাগ ভূমিই বন্ধুর এবং পর্বতময়। ফলে যে-কোনাে ধরনের অর্থনৈতিক কাজকর্ম গড়ে তুলতে অসুবিধা হয়। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

2. অনুর্বর মুক্তিকা : পর্বতময় ঢালু ভূপ্রকৃতির জন্য বেশিরভাগ জায়গায় মৃত্তিকা অগভীর এবং অনুর্বর। ফলে কৃষিকাজ ভালাে হয় না।

3. প্রতিকুল জলবায়ু : এখানকার জলবায়ু শীতল এবং আর্দ্র প্রকৃতির এই আর্দ্র ও স্যাতসেঁতে জলবায়ু জীবনধারণের জন্য অনুপযুক্ত।

4. শিল্পের কাঁচামাল ও শক্তিসম্পদের অভাব : কৃষিভিত্তিক ও খনিজভিত্তিক কাঁচামাল ও শক্তিসম্পদের অভাবে এখানে শিল্পের বিকাশ সম্ভব হয়নি।

প্রশ্নের মান – ৫
1. ভারতে কৃষিকাজের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

⦿ ভারতে কৃষিকাজের বৈশিষ্ট্য :

1. জীবিকাসত্তাভিত্তিক কৃষি : ভারতীয় কৃষির প্রধান বৈশিষ্ট্য হল জীবনধারণভিত্তিক কৃষি। কৃষি নির্ভর জনবহুল দেশ হওয়ায় অধিবাসীরা জীবন ধারণের জন্য প্রধানত খাদ্যশস্য চাষ করে। অতি সামান্য পরিমাণ উদবৃত্ত শস্যকে বাজারে বিক্রি করে অন্যান্য চাহিদা পূরণ করে। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

2. জনসংখ্যার চাপ : অত্যধিক জনসংখ্যার জন্য মাথাপিছু কৃষিজমির পরিমাণ খুব কম। কম পরিমাণ জমি থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষের খাদ্যের চাহিদা পূরণের জন্য জমির পরিমাণ কম হওয়ায় জমির ওপর প্রচুর চাপ পড়ছে।

3. কৃষিতে পশুশক্তির প্রাধান্য : ভারতে কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তির প্রয়োগ এখনও বিশেষভাবে শুরু হয়নি। ফলে চাষের কাজে গোরু, মহিষ, গাধা ইত্যাদি পশুশক্তির প্রাধান্য দেখা যায়। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

4. মৌসুমি বৃষ্টির নির্ভরতা : ভারতে কৃষিকাজে জলের জোগান প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মৌসুমি বৃষ্টিপাত থেকেই হয়ে থাকে। ভারতের মোট বৃষ্টিপাতের বেশিরভাগ হল মৌসুমি বৃষ্টিপাত। বর্ষাকালে এর ওপর নির্ভর করে খরিফ শস্য এবং শীতকালে বৃষ্টির সঞ্চিত জলে সেচের মাধ্যমে রবিশস্য চাষ করা হয়।

5. জলসেচের ব্যবহার : মৌসুমি বৃষ্টিপাত বছরে 3-4 মাসের জন্য সীমাবদ্ধ। বছরের বাকি সময়ে নদনদী, জলাশয়, ভৌমজলের সাহায্যে কৃষিকাজ করা হয়।

6. ক্ষুদ্রাকৃতি জমিজোত : ভারতীয় কৃষির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল ক্ষুদ্রাকৃতি জমিজোত। বর্তমানে ভারতীয় কৃষিজমি জোতের গড় ক্ষেত্রফল 1.16 হেক্টর। মূলত একান্নবর্তী পরিবারগুলির ভেঙে যাওয়া, জমিদারি হস্তান্তরকরণ ইত্যাদি কারণে বৃহদাকার জোতগুলি ছোটো ছোটো জোতে ভেঙে গেছে। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

7. কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার : জমির সর্বাধিক পরিমাণ ব্যবহার করে সর্বোচ্চ উৎপাদনের উদ্দেশ্যে নিবিড় পদ্ধতিতে কৃষিকাজ হয়। এজন্য স্বল্প পরিমাণ জমিতে অধিক উৎপাদনের উদ্দেশ্যে জৈব সারের পরিবর্তে অনেক বেশি পরিমাণে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক অনিয়ন্ত্রিতভাবে ব্যবহার করা হয়। তবে কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের অতিরিক্তি ব্যবহারে মাটির ক্ষতি হচ্ছে।

৪. খাদ্যশস্যের প্রাধান্য : জনবহুল ভারতবর্ষে অধিবাসীদের খাদ্যের জোগানের জন্য কৃষিতে খাদ্যশস্যের প্রাধান্য বেশি দেওয়া হয়। ভারতের মোট কৃষিজমির 2/3-এরও বেশি অংশে খাদ্যশস্য চাষ করা হয়।

2. ধান চাষের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশের বিবরণ দাও। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

⦿ ধান চাষের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশ ➺

পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক মানুষের খাদ্যশস্য হল ধান। ধান মৌসুমী অঞ্চলের ফসল বলে ধানের চাষ দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ। এর বাইরে পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলে খুব সামান্য ধানই জন্মে থাকে। ধান চাষের অনুকূল ভৌগােলিক পরিবেশগুলিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় – প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং অর্থনৈতিক পরিবেশ। নিচে এদের সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল –

⦿ প্রাকৃতিক পরিবেশ ➺
1. জলবায়ু : ধান ক্রান্তীয় মৌসুমী জলবায়ু অঞ্চলের ফসল, তাই ধান চাষে প্রচুর উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাতের প্রয়ােজন হয়।

(a) উষ্ণতা : ধান চাষের জন্য উপযােগী উষ্ণতা হল গড়ে 20 সেলসিয়াস থেকে 30 সেলসিয়াস। তবে অধিক উষ্ণতায় ধান দ্রুত পাকে।

(b) বৃষ্টিপাত : ধান চাষের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাতের প্রয়ােজন হয়। গড়ে ১০০ সে.মি. থেকে ২০০ সে.মি. বৃষ্টিপাত ধানচাষের পক্ষে উপযুক্ত। বৃষ্টিপাত কম হলে জলসেচ করতে হয়। ধানের চারা যখন বড় হয় তখন বেশি বৃষ্টিপাত হলে ধান পুষ্ট হয় কিন্তু ধান পাকার সময় বৃষ্টিপাত হলে শস্যহানির আশঙ্কা থাকে।

2. মৃত্তিকা : উর্বর মৃত্তিকা ধান চাষের জন্য উপযােগী। তবে উপযুক্ত উষ্ণতা, সার ও জলের সরবরাহ থাকলে যে কোনাে মাটিতে ধান চাষ হয়। নদী অববাহিকা ও ব – দ্বীপ অঞ্চলের উর্বর পলিমাটিতে ধান সবচেয়ে ভাল জন্মায়। কাদাযুক্ত দো–আঁশ মাটিতে ধান চাষ ভাল হয় কারণ এই মাটিতে ধানের শিকড় প্রবেশ করতে পারে এবং এইরকম মাটির জলধারণের ক্ষমতা বেশি।

3. ভূমিরূপ : ধান চাষের প্রথম পর্যায়ে চারাগাছের গােড়ায় জল দাঁড়িয়ে থাকা বাঞ্ছনীয়। সেক্ষেত্রে সমতল জমি হওয়া আবশ্যক, যেখানে বাঁধ দিয়ে জল ধরে রাখা সুবিধাজনক। তবে পার্বত্য অঞ্চলেও ধান চাষ করা হয় ধাপ কেটে জমি সমতল করে। পৃথিবীর অধিকাংশ ধানজমি নদী অববাহিকার প্লাবনভূমি ও ব-দ্বীপ অঞ্চলের জলাভূমিগুলিতে অবস্থান করছে।

⦿ অর্থনৈতিক পরিবেশ ➺
1. শ্রমিক : ধান চাষে যন্ত্রের ব্যবহার সীমিত। ধান চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করা, আগাছা পরিষ্কার করা, বীজ বপন ও চারা রােপণ করা, শস্য সংগ্রহ করা ইত্যাদির জন্য প্রচুর দক্ষ ও সুলভ শ্রমিক প্রয়ােজন। ঘনবসতিপূর্ণ মৌসুমী জলবায়ু অঞ্চলে শ্রমিকের প্রাচুর্য ধান চাষকে উন্নতিলাভ করতে সাহায্য করেছে।

2. পরিবহন : উচ্চ ফলনশীল বীজ, কীটনাশক, রাসায়নিক সার, কৃষিযন্ত্রপাতি ইত্যাদি সংগ্রহ বা ফসল বাজারে পাঠানাে ইত্যাদির জন্য প্রয়ােজনীয় উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা থাকলে চাষীদের সুবিধা হয়।

3. চাহিদা : ধান মৌসুমী জলবায়ু অঞ্চলের প্রধান খাদ্যশস্য বলে এর অন্তর্গত সমস্ত অঞ্চলেই ধানের চাহিদা বেশি। ফলে এই অঞ্চলে ধানের চাষ প্রাধান্য পায়।

4. মূলধন : নিবিড় পদ্ধতিতে ধানের উৎপাদন বাড়ানাের জন্য কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার কম হলেও উচ্চ ফলনশীল বীজ, কীটনাশক, রাসায়নিক সার এবং শ্রমিকের মজুরি ও পরিবহন প্রভৃতির জন্য যথেষ্ট মূলধনের প্রয়ােজন হয়ে থাকে।
3. গম চাষের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশের বিবরণ দাও। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

⦿ গম চাষের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশ ➺
মানুষের অন্যতম প্রধান খাদ্যশস্য হল গম। প্রাচীনকাল থেকেই গমের ব্যবহার চলে আসছে। সঠিক তথ্য জানা না গেলেও গম চাষের সূত্রপাত ভূমধ্যসাগরের পূর্বদিকে ইউরােপের কোনাে একটি স্থানেই ঘটেছিল। গম বাণিজ্যিক ফসল হিসাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গম প্রধানত নাতিশীতােষ্ণ মণ্ডলের শস্য, তবে অধিক শীত ও উষ্ণ জলবায়ুতেও গম উৎপন্ন হয়। গম চাষের উপযুক্ত ভৌগােলিক অবস্থান হল উত্তর গােলার্ধে ২০° থেকে ৬৬° উত্তর অক্ষাংশ এবং দক্ষিণ গােলার্ধে ২০° থেকে ৪৫° দক্ষিণ অক্ষাংশ। গম চাষের জন্য অনুকূল ভৌগােলিক পরিবেশগুলিকে দু’ভাগে ভাগ করা যায়। যথা – প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং অর্থনৈতিক পরিবেশ । নিচে এগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল –

⦿ প্রাকৃতিক পরিবেশ ➺

1. জলবায়ু : গম শীতল ও নাতিশীতােষ্ণ অঞ্চলের কম বৃষ্টিপাতযুক্ত স্থানের ফসল। গম চাষে মাটির চেয়ে জলবায়ুর প্রভাব অনেক বেশি। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

(a) উষ্ণতা : সাধারণভাবে গম চাষের জন্য ১৪° -১৯° সেলসিয়াস গড় উষ্ণতা আদর্শ। তবে গম চাষের প্রথম অবস্থায় শীতল ও আর্দ্র আবহাওয়া এবং পরে ফসল কাটার সময় উষ্ণ এবং শুষ্ক রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়ার প্রয়ােজন।

(b) বৃষ্টিপাত : শীতল ও নাতিশীতােষ্ণ অঞ্চলের মাঝারি থেকে অল্প বৃষ্টিপাতযুক্ত স্থানে গম চাষ হয়। গমের বীজ থেকে অঙ্কুর বের হওয়া এবং পুষ্টিসাধনের জন্য ৫০ – ১০০ সে.মি. বৃষ্টিপাতের প্রয়ােজন। তবে ১০০ সেন্টিমিটারের বেশি বৃষ্টি হলে গম চাষের ক্ষতি হয়। শীতকালীন গম চাষের জন্য ৪০ সেন্টিমিটারের কম বৃষ্টিপাত হলেও চলে। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

(c) তুষারপাত : গম চাষের জন্য তুষারপাত ক্ষতিকারক। গম জন্মানাের জন্য কমপক্ষে ১০০ টি তুষারমুক্ত দিনের প্রয়ােজন। বর্তমানে এমন অনেক গমের বীজ আবিষ্কার হয়েছে যা বপনের তিন মাসের মধ্যে ফসল বুনে, পাকিয়ে ও কেটে ঘরে তােলা যায়।

2. মৃত্তিকা : গম চাষের জন্য উর্বর ভারী দো – আঁশ মাটি বিশেষ উপযােগী। তৰে জলসেচের সুব্যবস্থা থাকলে উর্বর নরম মাটি, খড়িমাটি বা বেলেমাটিতেও গম চাষ করা যায়।

3. ভূমিরূপ : জল নিকাশি ব্যবস্থাসহ প্রায় সমতল বা অল্প ঢালু এবং উঁচু জমি গম চাষের পক্ষে উপযুক্ত। বর্তমানে বেশিরভাগ কৃষিজমিতেই আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হয়। তাই গম চাষের জমি বেশি চালু হলে বা আয়তন ছােট হলে যন্ত্রপাতি ব্যবহারে অসুবিধা দেখা দেয়। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

⦿ অর্থনৈতিক কারণ ➺

1. শ্রমিক : গম চাষে ভূমি কর্ষণ, বীজ বপন, শস্য কর্তন – সমস্ত কাজই এখন বেশিরভাগই যন্ত্রের সাহায্যে করা হয়। তাই খুব বেশি শ্রমিকের প্রয়ােজন হয় না। তবে অনুন্নত দেশগুলিতে যন্ত্রের ব্যবহার কম হওয়ায় সুলভ শ্রমিক অপরিহার্য। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

2. মূলধন : আধুনিক কৃষিপদ্ধতিতে গম চাষ হয় বলে অর্থাৎ কৃষি যন্ত্রপাতি, উচ্চ ফলনশীল বীজ, উৎকৃষ্ট সার, কীটনাশক, জলসেচ এবং শ্রমিকদের মজুরির জন্য প্রচুর মূলধন লাগে।

3. পরিবহন : গম সাধারণত বাণিজ্যিক হারে উৎপন্ন হয়, তাই পরিবহন ব্যবস্থা উন্নত হওয়া প্রয়ােজন, যাতে কৃষিক্ষেত্র ও বাজারের মধ্যে যােগসূত্র গড়ে ওঠে।

4. চাহিদা : গম বাণিজ্যিক ফসলের অন্তর্গত, তাই স্থানীয় বাজার ছাড়াও সারা বিশ্বে এর চাহিদা রয়েছে।

4. চা চাষের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশের বিবরণ দাও। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

⦿ চা চাষের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশ ➺
চা প্রধানত পানীয় ফসল। মৌসুমী অঞ্চলের পার্বত্য ও উচ্চভূমিতে জন্মে থাকে। একে বাগিচা ফসলও বলা হয়। চা চাষের অনুকূল ভৌগােলিক পরিবেশ দুভাগে বিভক্ত। যথা – প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং অর্থনৈতিক পরিবেশ। নিচে এগুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হল –

⦿ প্রাকৃতিক পরিবেশ : চা চাষের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশগুলি হল –

1. জলবায়ু : চা চাষের জন্য প্রচুর উষ্ণতা এবং বৃষ্টিপাত প্রয়ােজন।

(a) উষ্ণতা : বার্ষিক গড় উষ্ণতা ১৫° সেলসিয়াসের বেশি এবং ৩৫° সেলসিয়াসের কম হলে চা গাছের পক্ষে ক্ষতিকারক। গড় উষ্ণতা ২৭ ° সেলসিয়াস চা চাষের পক্ষে আদর্শ।

(b) বৃষ্টিপাত : চা চাষে প্রচুর বৃষ্টিপাতের প্রয়ােজন হয়। বার্ষিক গড় ১৫০ সে.মি. – ২৫০ সে.মি বৃষ্টিপাত চা চাষের পক্ষে বিশেষ উপযােগী। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

2. মৃত্তিকা : চা চাষের পক্ষে লােহা মিশ্রিত উর্বর দো – আঁশ মৃত্তিকা এবং জৈব পদার্থে সমৃদ্ধ আম্লিক পড়সল মৃত্তিকা বিশেষ উপযােগী।

3. ভূ–প্রকৃতি : চা চাষের জন্য যথেষ্ট ঢালু জমি ও জমিতে জল নিকাশের সুবন্দোবস্ত থাকা একান্ত প্রয়ােজন। গােড়ায় জল জমলে চা গাছের ক্ষতি হয়।

⦿ অর্থনৈতিক পরিবেশ : চা চাষের অনুকূল অর্থনৈতিক পরিবেশগুলি হল – ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

1. শ্রমিক : বছরের বিভিন্ন সময়ে হাত দিয়ে বেছে চা পাতা তুলতে হয়। তাই চা চাষের জন্য প্রচুর সুলভ ও নিপুণ শ্রমিকের প্রয়ােজন।

2. মূলধন : চা বাগিচা গড়ে তােলা রীতিমত ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার। অন্যদিকে প্রতিযােগিতামূলক বাজারে উৎপাদনের উৎকর্ষ ঠিক রাখার জন্য সার, কীটনাশক, বাগিচা রক্ষণাবেক্ষণ এবং শ্রমিকের মজুরি ইত্যাদির জন্য প্রচুর মূলধন বিনিয়ােগ প্রয়ােজন হয়।

3. পরিবহন : সমস্ত রকম কাজের জন্য বাগিচা, বাজার ও বন্দরের মধ্যে উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে ওঠা দরকার। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

4. চাহিদা : চা উৎপাদক অঞ্চল থেকে প্রধান ভােগকেন্দ্রগুলি সাধারণত দূরে থাকে। চায়ের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাজার বৃদ্ধি চা উৎপাদনের পক্ষে অনুকূল।
5. কফি চাষের অনুকূল পরিবেশের বিবরণ দাও।

⦿ কফি চাষের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশ ➺
পানীয় ফসল হিসেবে ভারতে চায়ের পরেই কফির স্থান। কফি উৎপাদনের জন্য যে যে ভৌগােলিক পরিবেশের প্রয়ােজন, সেগুলি হল –

⦿ প্রাকৃতিক পরিবেশ ➺ কফি চাষের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশগুলি হল – ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

1. জলবায়ু : ক্রান্তীয় অঞ্চলের উষ্ণ-আর্দ্র পরিবেশ, বিশেষত নিরক্ষীয় আবহাওয়ায় কফি চাষ ভালাে হয়।

[i] উষ্ণতা : কফি চাষের জন্য বেশি উষ্ণতার প্রয়ােজন। সাধারণত 20°সে-25°সে উষ্ণতায় কফি চাষ করা হয়।
[ii] বৃষ্টিপাত : 150-250 সেন্টিমিটার বা তারও বেশি বৃষ্টিপাত হলে কফি চাষ ভালাে হয়।
[iii] ছায়া : কফি চারাগাছগুলিকে প্রখর সূর্যরশ্মি থেকে বাঁচানাের জন্য বাগিচার মধ্যে ছায়াপ্রদায়ী গাছ হিসেবে কলা, ভুট্টা প্রভৃতি বড়াে পাতার গাছ রােপণ করা হয়।

2. মৃত্তিকা : লাভাসৃষ্ট উর্বর মাটি এবং লাল দোআঁশ মাটি কফি চাষের উপযােগী। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

3. ভূমির প্রকৃতি : ঢালু উচ্চভূমি, বিশেষত পর্বতের পাদদেশে কফি গাছ ভালাে হয়। দক্ষিণ ভারতের দক্ষিণ কর্ণাটক, পার্বত্য অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তর কেরলের পার্বত্য অঞ্চল ও তামিলনাড়ুর উত্তরাংশে প্রচুর কফি উৎপন্ন হয়।

⦿ অর্থনৈতিক পরিবেশ ➺ কফি চাষের অনুকূল অর্থনৈতিক পরিবেশগুলি হল –

1. শ্রমিক : কফিগাছ হতে ফল সংগ্রহ, তাকে ভাজা এবং চূর্ণ করা প্রভৃতি কাজে প্রচুর শ্রমিকের প্রয়ােজন হয়। সুতরাং কফি চাষ করতেও চা–এর ন্যায় সুলভ শ্রমিকের একান্ত প্রয়ােজন।

2. মূলধন : কফি বাগিচা গড়ে তােলা রীতিমত ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার। অন্যদিকে প্রতিযােগিতামূলক বাজারে উৎপাদনের উৎকর্ষ ঠিক রাখার জন্য সার, কীটনাশক, বাগিচা রক্ষণাবেক্ষণ এবং শ্রমিকের মজুরি ইত্যাদির জন্য প্রচুর মূলধন বিনিয়ােগ প্রয়ােজন হয়।

3. পরিবহন : সমস্ত রকম কাজের জন্য বাগিচা, বাজার ও বন্দরের মধ্যে উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে ওঠা দরকার।

4. চাহিদা : কফি উৎপাদক অঞ্চল থেকে প্রধান ভােগকেন্দ্রগুলি সাধারণত দূরে থাকে। কফির অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাজার বৃদ্ধি চা উৎপাদনের পক্ষে অনুকূল।


6. কার্পাস চাষের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশের বিবরণ দাও। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

⦿ কার্পাস চাষের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশ ➺
কার্পাস ভারতের প্রধান তন্তু ফসল। কার্পাস চাষের জন্য যে অনুকুল প্রাকৃতিক পরিবেশ বিশেষভাবে প্রয়ােজন, সেগুলি হল —

1. জলবায়ু : তুলাে ক্রান্তীয় ও উপক্ৰান্তীয় অঞ্চলের ফসল ও এখানকার মাঝারি ধরনের উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাতযুক্ত অঞ্চলে তুলাে চাষ করা হয়।

(i) উষ্ণতা : তুলাে চাষের জন্য গড়ে 20°সে-26 °সে উষ্ণতা প্রয়ােজন।
(ii) বৃষ্টিপাত : বার্ষিক 60-100 সেমি বৃষ্টিপাতে তুলাে চাষ ভালাে হয়। অবশ্য উত্তর পশ্চিম ভারত ও দক্ষিণ ভারতের উপকূলীয় অঞ্চলে জলসেচের সাহায্যে 60 সেমির কম বৃষ্টিপাতযুক্ত এলাকাতেও তুলাে চাষ করা হচ্ছে।
(iii) সামুদ্রিক বাতাস : সামুদ্রিক লােনা বাতাসে তুলাে চাষ ভালাে হয়।

2. মৃত্তিকা : চুন মেশানাে উর্বর দোআঁশ মাটি তুলাে চাষের পক্ষে আদর্শ। এ ছাড়া, চারনােজেম মাটি এবং লাভা থেকে গঠিত দাক্ষিণাত্যের কালাে রেগুর মাটিতে প্রচুর পরিমাণে তুলাে উৎপাদিত হয়।

3. ভূমির প্রকৃতি : তুলাে গাছের গােড়াতে যাতে জল জমতে না পারে সেজন্য উত্তম জলনিকাশি ব্যবস্থাযুক্ত সমতল জমি বা সামান্য ঢালু জমি এই চাষের পক্ষে আদর্শ।
7. ইক্ষুচাষের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশের বিবরণ দাও। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

⦿ ইক্ষু চাষের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশ ➺
আখ উৎপাদনের জন্য যে যে অনুকূল ভৌগােলিক পরিবেশের প্রয়ােজন, সেগুলি হল –

⦿ প্রাকৃতিক পরিবেশ ➺ আখ উৎপাদনের অনুকূল অর্থনৈতিক পরিবেশগুলি হল –

1. জলবায়ু : আখ ক্রান্তীয় অঞ্চলের ফসল। খরিফ শস্য হিসেবে আখ চাষ করা হয়।
(i) উষ্ণতা : আখ চাষের জন্য 20°সে-27 °সে তাপমাত্রা প্রয়ােজন। এর থেকে বেশি উষ্ণতা আখ গাছের ক্ষতি করে।
(ii) বৃষ্টিপাত : বছরে 75-150 সেমি বৃষ্টিপাত আখ চাষের আদর্শ। তবে এর থেকে কম বৃষ্টিযুক্ত অঞ্চলে জলসেচের মাধ্যমে আখ চাষ করা হয়।
(iii) সামুদ্রিক আবহাওয়া : সামুদ্রিক লবণাক্ত আবহাওয়ায় আখ গাছ বেড়ে ওঠে এবং আখের রসে মিষ্টত্ব বাড়ে। তাই পশ্চিম ভারতে বেশি ভালাে আখ উৎপাদন হয়।
(iv) কুয়াশা : কুয়াশা, ধোঁয়াশা, তুষারপাত আখ চাষে খুব ক্ষতি করে।

2. মাটি : চুনযুক্ত দোআঁশ এবং কালােমাটি আখ চাষে বিশেষ উপযােগী। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

3. ভূমির প্রকৃতি : আখ চাষের জমিতে জল দাঁড়ালে তা চাষে ক্ষতি করে। একারণে সামান্য ঢালযুক্ত সমভূমি আখ চাষের পক্ষে আদর্শ। তাই ভালাে জলনিকাশি ব্যবস্থাযুক্ত ঈষৎ ঢালু জমি আখ চাষে ব্যবহৃত হয়।

⦿ অর্থনৈতিক পরিবেশ ➺ আখ উৎপাদনের অনুকূল অর্থনৈতিক পরিবেশগুলি হল –

1. মূলধন : নাটট্রোজেনযুক্ত সার, কীটনাশক, বীজ, জলসেচ ইত্যাদি উপচারসহ শ্রমিকদের মজুরি ও উন্নত পরিবহন ব্যবস্থার জন্য ইক্ষু চাষে যথেষ্ট মূলধনের প্রয়ােজন হয়।

2. শ্রমিক : ইক্ষু রােপণ ও ফসল কাটার জন্য দক্ষ ও সুলভ শ্রমিকের দরকার। এইসব কাজে যন্ত্রের ব্যবহার হয় না তাই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ইক্ষু চাষের প্রচলন বেশি।

3. পরিবহন : ইক্ষু ক্ষেতের সঙ্গে নিকটবর্তী চিনিকলগুলির দ্রুত যােগাযােগ ব্যবস্থা থাকা অপরিহার্য। কারণ ইক্ষু কাটার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রস বের না করলে রসের পরিমাণ কমে যায় ।

4. চাহিদা : কাটা ইক্ষু যেহেতু সংরক্ষণ করে রাখা যায় না তাই উৎপাদিত ইক্ষুর জন্য নির্ভরযােগ্য ও পর্যাপ্ত চাহিদা খুবই প্রয়োজন। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

8. ভারতের পূর্বাংশে লৌহ-ইস্পাত শিল্পের একদেশীভবনের কারণগুলি আলোচনা করো।

⦿ পূর্ব ও মধ্য ভারতে লােহা ও ইস্পাত শিল্পের কেন্দ্রীভবনের কারণ ➺
ভারতের অধিকাংশ লােহা ও ইস্পাত কারখানা গড়ে উঠেছে পূর্ব ও মধ্য ভারতে। এগুলি হল পূর্ব ভারতের দুর্গাপুর, কুলটি বার্নপুর, জামশেদপুর, রৌরকেলা, বােকারাে ও মধ্য ভারতের ভিলাই। এ ছাড়াও এই অঞ্চলে আরও কয়েকটি লােহা ও ইস্পাত কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প গৃহীত হয়েছে। এই অঞ্চলে লোহা ও ইস্পাত কারখানার কেন্দ্রীভবনের কারণগুলি হল —

1. কাঁচামালের সহজলভ্যতা : বিহারের সিংভূম, ছত্তিশগড়ের বাইলাডিলা, ওড়িশার ময়ুরভঞ্জ প্রভৃতি অঞ্চলের ম্যাগনেটাইট ও হেমাটাইট জাতীয় লৌহ – আকরিকের সুবিধা এবং ঝাড়খণ্ডের ঝরিয়া, বোকারো পশ্চিমবঙ্গের রানিগঞ্জ, ওড়িশার তালচের থেকে প্রচুর কয়লা পাওয়ার সুবিধা। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

2. জল ও বিদ্যুৎশক্তির জোগান : দামোদর, সুবর্ণরেখা, মহানদী প্রভৃতি নদীর জল পাওয়ার সুবিধা থাকায় এবং দামোদর ও হিরাকুন্দের জলবিদ্যুৎ পাওয়ার সুবিধা ও ফারাক্কা, দুর্গাপুর, বোকারো কেন্দ্র প্রভৃতি থেকে তাপবিদ্যুৎ পাওয়ার সুবিধা।

3. উন্নত পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা : পূর্ব ও দক্ষিণ – পূর্ব রেলপথ, উন্নত সড়কপথের সুবিধা থাকায় শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামালের জোগান ও উৎপাদিত দ্রব্য বাজারজাত করতে সুবিধা হয়।

4. সুলভ ও দক্ষ শ্রমিক : পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা ও ছত্তিশগড় প্রভৃতি রাজ্য থেকে প্রচুর সুলভ ও দক্ষ শ্রমিকের জোগান থাকায় এই শিল্প গড়ে উঠেছে।

5. বন্দরের সুবিধা ও বাজারে চাহিদা : কলকাতা, হলদিয়া, পারাদ্বীপ প্রভৃতি বন্দরের সুবিধা থাকায় আর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের বাজারে বিপুল চাহিদা থাকায় এই শিল্প গড়ে উঠেছে।
9. ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে কার্পাস বয়ন শিল্পের কেন্দ্রীভবনের কারণগুলি কী?
অথবা,
মুম্বাই ও আমেদাবাদ অঞ্চলে কার্পাস বয়ন শিল্পের একদেশীভবনের কারণগুলি ব্যাখ্যা করাে। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ
অথবা,
পশ্চিম ভারতের কৃষ্ণ মৃত্তিকা অঞ্চলে কার্পাস বয়ন শিল্পের একদেশীভবনের কারণ কী?
অথবা,
পশ্চিম ভারতে কাপাস বয়ন শিল্প গড়ে ওঠার অনুকূল পরিবেশ আলােচনা করাে।

⦿ ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে বা পশ্চিম ভারতের কৃষ্ণ মৃত্তিকা অঞ্চলে কার্পাস বয়ন শিল্পের কেন্দ্রীভবনের কারণ ➺
ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে বা পশ্চিম ভারতের কৃষ্ণ মৃত্তিকা অঞ্চলে, বিশেষত মহারাষ্ট্রের মুম্বাই, পুণে, নাগপুর, সােলাপুর, আকোলা ও জলগাঁও এবং গুজরাতের আমেদাবাদ, সুরাত, ভারুচ, ভাদোদরা, রাজকোট প্রভৃতি স্থানে অসংখ্য কার্পাস বয়ন শিল্পকেন্দ্র গড়ে উঠেছে। দেশের পশ্চিমাঞ্চলে এই কার্পাস বয়ন শিল্পের কেন্দ্রীভবনের কারণগুলি হল —

1. শ্রেষ্ঠ তুলাে উৎপাদক অঞ্চল : মহারাষ্ট্র গুজরাতের (ঔরঙ্গাবাদ, জলগাঁও, বুলধানা) কৃষ্ণ মৃত্তিকা অঞ্চল হল দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ তুলাে উৎপাদক অঞ্চল। ফলে এখানে এই শিল্পের প্রয়ােজনীয় কাঁচা তুলাে সুলভে পাওয়া যায়।

2. আর্দ্র জলবায়ু : আরব সাগরসংলগ্ন মহারাষ্ট্র ও গুজরাতের জলবায়ু আদ্র, যা সুতাে কাটার পক্ষে বিশেষ উপযােগী। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

3. সুলভ বিদ্যুৎশক্তি : উকাই ও কাদানা (গুজরাত); ভিবপুরী, খােপােলি ও কয়না (মহারাষ্ট্র) জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ট্রম্বে, নাসিক (মহারাষ্ট্র) তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে সুলভে বিদ্যুৎশক্তি এই শিল্প স্থাপনে সহায়ক হয়েছে।

4. বন্দরের সান্নিধ্য : ভারতের তিনটি প্রধান বন্দর—মুম্বাই, কান্ডালা, জওহরলাল নেহরু বন্দর এবং অন্যান্য অপ্রধান বন্দর-সুরাত, পােরবন্দর প্রভৃতি এই অঞ্চলে অবস্থিত। এর ফলে এই শিল্পের প্রয়ােজনীয় যন্ত্রপাতি ও উন্নতমানের তুলাে আমদানি এবং কার্পাস বস্ত্র রপ্তানির ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা হয়।

5. উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা : পশ্চিম, মধ্য ও কোঙ্কণ রেলপথ এবং 47, 48, 64, 160 নং জাতীয় রাজপথ এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রসারিত হওয়ায় এখানকার পরিবহণ ব্যবস্থাও উন্নত।

অন্যান্য কারণ ➺

1. পর্যাপ্ত মূলধন বিনিয়ােগ : বৃহৎ শিল্প পরিচালনায় অভিজ্ঞ পারসি, ভাটিয়া ও গুজরাতি ব্যবসায়ীরা এই অঞ্চলে কার্পাস বয়ন শিল্পের উন্নতিতে বিশেষ উদ্যোগী হয় এবং এজন্য পর্যাপ্ত মূলধনও বিনিয়ােগ করে। এ ছাড়া, মুম্বাই ভারতের মূলধনের রাজধানী হওয়ায় শিল্পের মূলধন পেতে অসুবিধা হয় না। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

2. সুলভ শ্রমিক : মুম্বাই ও আমেদাবাদ অঞ্চল ঘন জনবসতিপূর্ণ হওয়ায় এই অঞ্চলে শিল্পের জন্য প্রয়ােজনীয় সুলভ শ্রমিক সহজেই পাওয়া যায়।

3. শিল্প বিকাশের উপযুক্ত পরিকাঠামাে : মহারাষ্ট্র ও গুজরাত রাজ্যের শিল্প বিকাশের প্রয়ােজনীয় পরিকাঠামাে এই অঞ্চলে কার্পাস শিল্পের উন্নতির সহায়ক হয়েছে।

10. ভারতে ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পবিকাশের কারণগুলি আলোচনা করো।

⦿ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প গড়ে ওঠার কারণ ➺ ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

1. ধাতব দ্রব্যের জোগান : এই শিল্প গড়ে ওঠে ইস্পাত, তামা, অ্যালুমিনিয়াম প্রভৃতি ভারী ধাতব দ্রব্যের জোগানের ওপর নির্ভর করে। ইস্পাতের জোগানের জন্য চিত্তরঞ্জন ও জামসেদপুরে রেল ইঞ্জিন তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে। অ্যালুমিনিয়ামের জোগানের জন্য কোরাপুটে বিমান তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে। তামা ও অ্যালুমিনিয়ামের জন্য রেফ্রিজারেটর, বৈদ্যুতিক পাখা, মোটর জেনারেটর তৈরির কারখানা ভারতের শিল্প শহরগুলিতে গড়ে উঠেছে।

2. অন্যান্য দ্রব্যের জোগান : এই শিল্পের জন্য রবারের দ্রব্য, ঢালাই করার দ্রব্য, রং, প্লাস্টিক প্রভৃতি দরকার হয়। এসব দ্রব্য বিভিন্ন পেট্রোরাসায়নিক শিল্পের অনুসারী শিল্পকেন্দ্র থেকে পাওয়া যায়।

3. বিদ্যুতের জোগান : ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পে হাইভোল্টেজ ও লোভোল্টেজ সরবরাহসম্পন্ন বিদ্যুতের সবসময় জোগান থাকা আবশ্যক। ভারী ভারী মেশিন চালাতে এই বিদ্যুৎ দরকার হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কারখানার নিজস্ব উৎপাদন ব্যবস্থা থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

4. শিল্পসমাবেশের প্রভাব : যেসব অঞ্চলে একাধিক শিল্পের সমাবেশ ঘটে সেসব স্থানে ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প গড়ে ওঠে। হুগলি শিল্পাঞ্চল, জামসেদপুর শিল্পাঞ্চল, দুর্গাপুর-আসানসোল শিল্পাঞ্চল প্রভৃতি শিল্পাঞ্চলে একারণে ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প গড়ে উঠেছে।

5. মেধাবী ও দক্ষ শ্রমিকের উপস্থিতি : এই শিল্পের বিকাশে প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন মেধাবী ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ শ্রমিকের দরকার। এ ছাড়া সফটওয়্যার জানা কর্মীরও দরকার। ভারতবর্ষে এই ধরনের জ্ঞানসম্পন্ন কর্মীর কোনো অভাব নেই।
11. পশ্চিম ভারতে পেট্রো-রসায়ন শিল্পের কেন্দ্রীভবনের কারণগুলি আলোচনা করো।

বিশ্বের অন‍্যান‍্য দেশের মতো অতি সাম্প্রতিককালে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলেও পেট্রোরাসায়নিক শিল্পের প্রসার লক্ষ্য করা যায়। তবে, পশ্চিম ভারতে গুজরাট ও মহারাষ্ট্রে অধিক সংখ্যায় পেট্রোরাসায়নিক শিল্পকেন্দ্র গড়ে উঠেছে, অর্থাৎ এই অঞ্চলে পেট্রোরাসায়নিক শিল্পের কেন্দ্রীভবন ঘটেছে। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

⦿ পশ্চিম ভারতে পেট্রোরসায়ন শিল্পের উন্নতির কারণ ➺ পশ্চিম ভারতে এই পেট্রোরাসায়নিক শিল্পের উন্নতির কারণগুলি হল –

1. কাঁচামালের সহজলভ‍্যতা : পশ্চিম ভারতে আরবসাগরের মহিসোপানে বোম্বে হাই অঞ্চল, এছাড়া গুজরাট ও মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন খনিজ তেল উত্তোলক অঞ্চলের ওপর নির্ভর করে গড়ে ওঠা ট্রম্বে, কয়ালি, জামনগর প্রকৃতি তৈল শোধনাগার থেকে পেট্রোরাসায়নিক শিল্পের কাঁচামাল- ন‍্যাপথা, মিথেন, ইথিলিন প্রভৃতির পর্যাপ্ত যোগান পাওয়া যায়।

2. বন্দরের সান্নিধ‍্য : পশ্চিমাঞ্চলে মুম্বাই, নভসেবা, ওখা ও শুল্কমুক্ত কান্ডালা বন্দর মারফত খনিজ তেল ও আধুনিক যন্ত্রপাতি বিদেশ থেকে আমদানি এবং উৎপাদিত দ্রব‍্যসামগ্রী বিদেশে রপ্তানির সুবিধা রয়েছে।

3. বিদ‍্যুতের যোগান : উকাই, কয়না প্রভৃতি জলবিদ্যুৎকেন্দ্র, ট্রম্বে, কোলাপুর সহ বিভিন্ন তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র এছাড়া, তারাপুর, কাকরাপাড় প্রভৃতি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে এ অঞ্চলের শিল্পক্ষেত্রগুলিতে বিদ্যুতের পর্যাপ্ত যোগান পাওয়া যায়। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

4. উন্নত পরিবহন ব‍্যবস্থা : পশ্চিমাঞ্চলে তৈল শোধনাগার, শিল্পক্ষেত্র ও বাজারের মধ্যে সড়কপথ এবং রেলপথে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে; যা পেট্রোরাসায়নিক শিল্পে উন্নতির ক্ষেত্রে অন্যতম সহায়ক।

5. মূলধন বিনিয়োগ : রিলায়েন্স, মফতলাল প্রভৃতি বড় বড় শিল্পগোষ্ঠী লাভজনক এই শিল্পক্ষেত্রে প্রচুর মূলধন বিনিয়োগ করে। এছাড়া, এই শিল্পের গুরুত্ব দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় পশ্চিমাঞ্চলের এই শিল্পক্ষেত্রগুলিতে বিনিয়োগে সরকারি প্রচেষ্টাও লক্ষ্য করা যায়।

6. চাহিদা বা বাজার : দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত প্লাস্টিক, ডিটারজেন্ট, রং এছাড়া রাসায়নিক দ্রব্যাদি প্রভৃতি এই শিল্প থেকে পাওয়া যায়। ফলে স্থানীয় বাজার ছাড়াও এই শিল্পজাত দ্রব্যের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

7. সুলভ ও দক্ষ শ্রমিক : পশ্চিমের রাজ্যগুলি ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় এই অঞ্চলে শিল্পক্ষেত্রগুলিতে সুলভে শ্রমিক পাওয়ার সুবিধা রয়েছে। এছাড়া, দক্ষিণের রাজ্যগুলি থেকেও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ শ্রমিকের যোগান পাওয়া যায়।

12. ভারতে মোটরগাড়ি নির্মাণ শিল্পের বিকাশলাভ করার কারণগুলি কী কী?

⦿ ভারতে মোটরগাড়ি নির্মাণশিল্প গড়ে ওঠার কারণ ➺ ভারতে মোটরগাড়ি নির্মাণশিল্প গড়ে ওঠার কারণগুলি হল — ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

1. কাঁচামালের জোগান : গাড়ি নির্মাণশিল্পে অনেক রকমের কাঁচামাল প্রয়োজন হয়, যেমন—ইঞ্জিন, বড়ি, চাকা, ব্যাটারি, তামা, অ্যালুমিনিয়াম, বৈদ্যুতিক উপকরণ, রবার, প্লাস্টিক, কাচ, কাঠ, স্পঞ্জ, রং, কাপড় প্রভৃতি। ভারতে এসব শিল্পজাত দ্রব্যের অভাব হয় না।

2. শিল্পায়নের প্রভাব : ভারত লৌহ-ইস্পাত, তামা, অ্যালুমিনিয়াম, রবার ও প্লাস্টিক, রাসায়নিক শিল্প প্রভৃতি ক্ষেত্রে প্রভুত উন্নতি লাভ করেছে। এর ফলে বিভিন্ন শিল্পের শিল্পজাত দ্রব্যের সরবরাহ বজায় থাকে।

3. শিল্প সমাবেশের প্রভাব : ছোটো ছোটো যন্ত্রাংশ জুড়ে গাড়ি তৈরি হয়। ভারতবর্ষের শিল্পাঞ্চলগুলিতে প্রচুর শিল্পের সমাবেশ ঘটায় বিভিন্ন যন্ত্রাংশ খুবই সহজে পাওয়া যায়।

4. পর্যাপ্ত মূলধন : বিশ্বায়ন ও উদার অর্থনীতির প্রভাবে প্রসিদ্ধ বহুজাতিক গাড়ি নির্মাণ কোম্পানির আগমন ঘটেছে ভারতে। ফলে এই শিল্পে মূলধনের কোনো অভাব হয় না।

5. সড়কপথের প্রসার ও গ্রাম-সড়ক যোজনা : সড়কপথের প্রসার ঘটায় যাত্রী ও পণ্য পরিবহণে গাড়ির চাহিদা বৃদ্ধি। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

13. ভারতের অসম জনবণ্টনের কারণগুলি আলোচনা করো।

⦿ ভারতের অসম জনবণ্টনের কারণ ➺ ভারতে জনসংখ্যার প্রধান বৈশিষ্ট্যই হল অসম বণ্টন। এর কারণগুলি হল –

1 ভূপ্রকৃতি : ভূমির উচ্চতা, ঢাল, বন্ধুরতা, জলমগ্ন জলাভূমি প্রভৃতি উপাদানের ওপর ভিত্তি করে জনবসতি গড়ে ওঠে। সিন্ধু, গঙ্গা ও উপকূলীয় সমভূমি কৃষি, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও শিল্পে উন্নত। তাই জনসংখ্যা খুব বেশি। আবার, হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল উঁচু ও বন্ধুর হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিল্প ও কৃষিতে অনুন্নত। তাই, জনসংখ্যা এখানে খুবই কম।তবে কয়েকটি বিশেষ স্থানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে পর্যটনশিল্পে উন্নত হওয়ায় জনসংখ্যা বেশি। মালভূমি অঞ্চলে ভূমির ঢাল ও উচ্চতা মধ্যম প্রকার। ফলে জনবণ্টন মাঝারি। তবে, মালভূমির কয়েকটি স্থানে খনিজ সম্পদের ওপর ভিত্তি করে শিল্প গড়ে ওঠায় শিল্পকেন্দ্রকে কেন্দ্র করে জনবসতি গড়ে উঠেছে। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

2. নদনদী : ভারতে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, গোদাবরী, কৃয়া, কাবেরী প্রভৃতি নদী অববাহিকা উর্বর হওয়ায় জনসংখ্যা বেশি। প্রত্যক্ষভাবে নদীর মাধ্যমে জলসেচ, জলবিদ্যুৎ উৎপাদন, পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। নদী যোগাযোগ ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হওয়ায় নদী উপত্যকায় শিল্পের বিকাশ ঘটেছে। তাই নদী সমভূমি জনাকীর্ণ।

3. জলবায়ু : জনসংখ্যার স্থানীয় বণ্টন জলবায়ুর দ্বারা প্রভাবিত হয়। উপকূলের জলবায়ু সারাবছর মনোরম বলে জনসংখ্যা বেশি। উত্তর-পূর্ব পাহাড়ি রাজ্যগুলিতে জলবায়ু স্যাঁতসেঁতে বলে জনসংখ্যা কম। আবার, উচ্চ হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে অত্যধিক শৈত্য এবং থর মরু অঞ্চলে অত্যধিক গরম ও স্বল্প বৃষ্টির কারণে স্থানগুলি জনবিরল। বৃষ্টিপাতের বন্টন জনসংখ্যার বন্টনের ওপর প্রভাব ফেলে। এজন্য চালু কথাটি হল— The population map of India follows the rainfall map।

4. মৃত্তিকা : উর্বর লালমাটি, কৃষ্ণ মৃত্তিকা ও পলিমাটি চাষ-আবাদের উপযোগী। এসব মাটিতে ধান, গম, পাট, তুলা, আখ প্রভৃতি ফসল প্রচুর পরিমাণে উৎপন্ন হয়। ভারতের প্রধান নদী অববাহিকা অঞ্চলগুলিতে এই ধরনের উর্বর মাটির প্রাধান্য থাকায় এসব অঞ্চলে কৃষিজীবী মানুষের আধিক্য দেখা যায়। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

5. জলাশয় ও ভৌমজল : জলনিকাশি ব্যবস্থা, ভৌমজলস্তরের গভীরতা ও প্রাপ্তি, জলাভূমির অবস্থান প্রভৃতি গ্রামীণ জনসংখ্যাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। থর মরুভূমির জনবণ্টন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জলের উৎসের ওপর নির্ভরশীল। বন্যাপ্রবণ অঞ্চলগুলিতে, যেখানে জলনিকাশি ব্যবস্থা উন্নত, সেখানে প্রচুর মানুষ বসবাস করে। সমভূমি অঞ্চলের মধ্যে যেখানে ভৌমজল সহজে পাওয়া যায়, সেখানে কৃষিকাজ উন্নত বলে জনসংখ্যাও বেশি।

6. বনভূমি : উত্তর-পূর্বের পার্বত্য অঞ্চল, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের গভীর বনভূমি বসবাসের প্রতিকূল পরিবেশ হওয়ায় জনসংখ্যা কম। তবে, বনভূমি সীমান্ত অঞ্চলে বনজ সম্পদ (কাঠ, মধু, লতাপাতা, ফলমূল ইত্যাদি) সংগ্রহের কারণে জনবসতি গড়ে উঠতে দেখা যায়। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

7. শিল্প : শিল্পের উন্নতিতে কাজের সুযোগ বাড়ে। তাই, শিল্পাঞ্চলগুলিতে জনসংখ্যা অত্যধিক বেশি হয়। পশ্চিমবঙ্গের হুগলি নদীর উভয়তীর, হলদিয়া, দুর্গাপুর, মুম্বাই, পুনে, গুজরাত এই কারণেই অতি-জনাকীর্ণ।

8. যোগাযোগ ব্যবস্থা : সমভূমি অঞ্চলে জালের মতো সড়কপথ, রেলপথ বিস্তৃত বলেই অতি-জনাকীর্ণ। আবার যোগাযোগ ব্যবস্থার অনুন্নতির কারণেই হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল কম জনাকীর্ণ।

14. ভারতে শহর-নগর গড়ে ওঠার কারণগুলি আলোচনা করো। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

⦿ ভারতে শহর-নগর গড়ে ওঠার কারণ ➺ ভারতে নগর গড়ে ওঠার প্রধান কারণগুলি হল –

1. প্রশাসনিক শহর : প্রশাসনিক কার্য পরিচালনার জন্য কোনো স্থানে গড়ে ওঠে প্রশাসনিক ভবন, আবাসন এবং অঞ্চলটি শহরে পরিণত হয়। ভারতের দিল্লি, চণ্ডীগড় প্রভৃতি প্রশাসনিক শহর।

2. ব্যাবসাবাণিজ্যিক শহর : ব্যাবসাবাণিজ্যের কারণে বড়ো বড়ো অফিস, ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক সংস্থা গড়ে ওঠার কারণে শহর গড়ে ওঠে। যেমন – মুম্বাই, শিলিগুড়ি।

3. উৎপাদন শহর : শিল্প উৎপাদন ও খনিজ উত্তোলনকে ঘিরে চলে সুবিশাল কর্মযজ্ঞ। ফলে সেখানে শহর গড়ে ওঠে। ভারতের জামসেদপুর, ভিলাই হল শিল্পশহর। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

4. যোগাযোগ ব্যবস্থা ভিত্তিকশহর : বৃহদায়তন রেলজংশন, রাস্তার সংযোগস্থল, বন্দর প্রভৃতিকে ঘিরে শহর গড়ে ওঠে। যেমন – মুঘলসরাই (রেলজংশন-এর নিকট স্থাপিত শহর), পারাদ্বীপ (বন্দর শহর)।

5. সাংস্কৃতিক শহর : শিক্ষা, বিনোদন প্রভৃতির ওপর ভিত্তি করে অনেক সময় শহর গড়ে ওঠে। যেমন শান্তিনিকেতন।

6. পর্যটনকেন্দ্র শহর : প্রাকৃতিক ও নৈসর্গিক দৃশ্য মনোরম জলবায়ু প্রভৃতি কারণে কোনো অঞ্চলে প্রচুর পর্যটক আসে, গড়ে ওঠে হোটেল ও রেস্টুরেন্ট এবং অঞ্চলটি শহরে পরিণত হয়। যেমন, মুসৌরি, নৈনিতাল। এ ছাড়া, (vii) ধর্মস্থান (বারাণসী, মাদুরাই), (viii) ঐতিহাসিক স্থান (আগ্রা) ইত্যাদি কারণের ওপর ভিত্তি করেও শহর গড়ে ওঠে।
15. ভারতের নগরায়ণের সমস্যাগুলি আলোচনা করো। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

⦿ ভারতের নগরায়ণের সমস্যা ➺ অপরিকল্পিতভাবে নগরায়ণ হওয়ায় অনেক ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। যেমন –

1. শহরের অপরিকল্পিত বৃদ্ধি : মূল শহরগুলিতে জীবিকার সুযোগসুবিধা বেশি থাকায় গ্রামাঞ্চল থেকে মানুষ মূল শহরে ভিড় জমায়। গ্রামাঞ্চলের এইসব মানুষ শহরতলিতে বিক্ষিপ্ত ও অপরিকল্পিতভাবে বসবাস করতে শুরু করে। এর ফলে পৌর এলাকা বিক্ষিপ্তভাবে যত্রতত্র প্রসারিত হয়, যা পৌর বিক্ষেপণ নামে পরিচিত। কোনোরূপ পরিকল্পনা ছাড়াই ও পরিকাঠামোহীন (রাস্তাঘাট, জল, বিদ্যুৎ ইত্যাদি) অবস্থায় শহরের বৃদ্ধি ঘটে এবং অন্যান্য অনেক সমস্যা সৃষ্টি করে।

2. বাসস্থানের অভাব : শহরমুখী জনসংখ্যার চাপ বাসস্থানের সমস্যা তৈরি করে। থাকার জায়গার অভাব হয়।

3. পরিবহণের সমস্যা : জনসংখ্যার তুলনায় রাস্তার তেমন বিস্তার ঘটে না। ফলে যাতায়াতের খুব অসুবিধা হয়।

4. জলনিকাশি ও পয়ঃপ্রণালীর সমস্যা : অত্যধিক জনসংখ্যার চাপে উপযুক্ত নর্দমা ও পয়ঃপ্রণালীর ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির জল বেরিয়ে যেতে পারে না। এ ছাড়া খোলা নর্দমা জঞ্জালে ভরতি থাকে বলে নর্দমার নোংরা জল চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে ও দূষণ ঘটায়। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

5. রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি : দূষণের ফলে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হয়। মশা, মাছির উপদ্রব বাড়ে। ফলে ম্যালেরিয়া, আন্ত্রিক, কলেরা, টাইফয়েড প্রভৃতি রোগ দেখা যায়।

6. জল ও আলোর সমস্যা : নগরায়ণের ফলে জলের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় জলের সীমিত ভাণ্ডারে টান পড়ে ও জলসংকট তৈরি হয়। একইভাবে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ায় বিদ্যুৎ রাহে টান পড়ে ও প্রায়শই লোডশেডিং ও ভোল্টেজ কম হয়।

7. দূষণজনিত সমস্যা : প্রচুর যানচলাচলের জন্য ধোঁয়া ও ধুলোয় বায়ুদূষণ তীব্র হয়। এ ছাড়া যানবাহনের হর্ন ও ইঞ্জিনের আওয়াজে শব্দদূষণ হয়। নর্দমা ও পয়ঃপ্রণালীর নোংরা জল জলদূষণ ঘটায়।

16. ভারতের অর্থনৈতিক উন্নতিতে পরিবহণ ব্যবস্থার গুরুত্ব লেখো। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

⦿ পরিবহন ব্যবস্থার গুরুত্ব ➺
1. কৃষির উন্নতি : ভারত কৃষিপ্রধান দেশ। ভারতের অর্থনীতি কৃষিজ দ্রব্যের বণ্টন, উৎপাদনের উপর নির্ভর। কৃষিপণ্য, কৃষি যন্ত্রপাতি, বীজ, কীটনাশক কারখানায় পৌঁছে দিতে পরিবহন দরকার।

2. শিল্প : শিল্পের কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি, শ্রমিক সরবরাহ পণ্য বাজারে প্রেরণে পরিবহনের গুরুত্ব অপরিসীম।

3. প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ : খনিজ, মৎস্য, কাজ সম্পৃক্ত পরিবহন ব্যবস্থা দ্বারা সরবরাহ করা হয়।ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

4. বাণিজ্য : অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য যথা পণ্যদ্রব্য আমদানি-রপ্তানি পরিবহনের উপর নির্ভরশীল।

5. কর্মসংস্থান : কর্মসংস্থানের বিকাশের ক্ষেত্র হল পরিবহন ব্যবস্থা। রেলপথ কর্মসংস্থানের বিশাল উৎস।

6. পরিবেশ : উত্তর, উত্তর-পশ্চিম, উত্তর-পূর্বের দুর্গদুর্গম অঞ্চলে প্রতিরক্ষার কারণে সড়ক পথ, বিমান পথের উন্নতি হচ্ছে।

7. শিক্ষা সংস্কৃতি : পরিবহনের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে যাতায়াতের মধ্য দিয়ে শিক্ষা, সংস্কৃতি পরিবেশের আদানপ্রদান হয়।

8. জাতীয় কর বৃদ্ধি : কর সংগ্রহ পরিবহন হেতু কৃষি, শিল্প, বাণিজ্যের প্রসার জাতীয় আয় বৃদ্ধিতে ভূমিকা নেয়।

17. রেলপথকে ভারতের জাতীয় জীবনরেখা বলার কারণ বিশ্লেষণ করো। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

⦿ রেলপথকে ভারতের জাতীয় জীবনরেখা বলার কারণ ➺ রেলপথকে জাতীয় জীবনরেখা বলে কারণ —

1. কৃষির উন্নতি : কৃষিপ্রধান দেশ ভারতবর্ষের প্রয়োজনীয় শস্য যথা ধান, গম, ডাল, পাট ও কৃষিজ সার, যন্ত্রপাতি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে রূপান্তর করতে রেলপথের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

2. শিল্পোন্নতি : শিল্পের কাঁচামাল, আকরিক লোহা, কয়লা, যন্ত্রপাতি স্থানান্তকরণ করতে রেলপথের ভূমিকা অন্যরূপ। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

3. তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে : ভারতে সবচেয়ে বেশি যে বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হয় তা হল তাপবিদ্যুৎ, কয়লা স্থানান্তর করতে রেলপথের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

4. খনিজ উত্তোলন : ভারতে প্রাপ্ত খনিজ সম্পদগুলি রেলপথের দ্বারা অন্যত্র পরিবাহিত করা হয়। যেমন – লোহা, খনিজ।

5. সামরিক ক্ষেত্র : দেশের আভ্যন্তরীণ শান্তি বজায় রাখা এবং মেল সরবরাহ করার জন্য রেলপথ প্রধান ভূমিকা পালন করে।

18. ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নে জলপথ পরিবহণের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ
অথবা,
জলপথ পরিবহণের গুরুত্ব লেখো।

⦿ জলপথের গুরুত্ব (Importance of Waterways) ➺
(১) পরিবহণ ব্যয় : জলপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণের ভাড়া সড়কপথ বা রেলপথের চেয়ে কম। তাই পরিবহণ ব্যয়ও কম।

(২) নির্মাণ খরচ : জলপথ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ থাকলেও জলপথ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের তেমন কোনো খরচ নেই।

(৩) পণ্য পরিবহণ : জলপথে ভারী, শৌখিন, ভঙ্গুর বা বৃহদায়তন পণ্যসামগ্রী পরিবহণ করা হয়। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

(৪) কর্মসংস্থান : কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এই জলপথ পরিবহণের গুরুত্ব যথেষ্ট।

(৫) যানজট : সমুদ্রপথে যানজটের কোনো সমস্যা নেই তবে ভাসমান হিমশৈল বা সমুদ্র তলদেশের আকৃতি (গায়ট) বা নানান ভূপ্রকৃতি অনেক সময় জাহাজ চলাচলের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

(৬) বাণিজ্য : বিপুল পরিমাণ পণ্যসামগ্রী স্বল্প ব্যয়ে বহু দূরদেশে প্রেরণ করা যায়। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

(৭) জ্বালানি ব্যয় : জলপথ পরিবহণ ব্যবস্থায় ব্যবহৃত যানগুলির জ্বালানি ব্যয় খুবই কম।

(৮) পরিবহণ ক্ষমতা : জলপথে ব্যবহৃত যানগুলির পরিবহণ ক্ষমতা সড়কপথে ব্যবহৃত যানের পরিবহণ ক্ষমতা অপেক্ষা অধিক। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

(৯) পরিবেশদূষণ : জলপথ পরিবহণ ব্যবস্থায় দূষণ ঘটার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই যদি-না নিষ্কাশিত হয়ে তেলবাহী জাহাজ থেকে তেল সমুদ্রজলে মেশে।
19. পাঞ্জাব-হরিয়ানায় কৃষিসমৃদ্ধির কারণগুলি কী কী?

⦿ পাঞ্জাব-হরিয়ানায় কৃষিসমৃদ্ধির কারণ ➺
পশ্চিম ভারতে অবস্থিত পাঞ্জাব-হরিয়ানা দেশের অন্যতম কৃষিসমৃদ্ধ অঞ্চল। এটি ভারতের শ্রেষ্ঠ গমবলয়। এ ছাড়াও এখানে প্রচুর পরিমাণে ধান, তুলাে, আখ প্রভৃতি ফসল উৎপাদিত হয়। এই অঞ্চলের এক-একটি কৃষিজমিতে শীতকালে গম এবং গ্রীষ্মকালে ধান বা তুলাে বা আখ নিয়ে বছরে মােট যে পরিমাণ ফসল উৎপাদিত হয়, বিশ্বের খুব কম অঞ্চলেই তা দেখা যায়। পাঞ্জাব-হরিয়ানায় এইরূপ

কৃষিসমৃদ্ধির প্রধান কারণগুলি হল —

1. জলবায়ু : রাজ্য দুটি উপক্রান্তীয় জলবায়ু অঞ্চলে অবস্থিত, যা গম চাষের পক্ষে আদর্শ। এ ছাড়া পশ্চিমি ঝঞ্ঝার জন্য শীতকালে এই অঞ্চলে যে বৃষ্টিপাত হয়, তা এখানে গমসহ অন্যান্য রবি ফসল চাষে বিশেষ উপযােগী। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

2. মৃত্তিকা : পাঞ্জাব-হরিয়ানার বেশিরভাগ এলাকা উর্বর পলিগঠিত সমতল ভূমি, যেখানে গম, ধান, আখ, তুলাে প্রভৃতি সহজেই চাষ করা যায় এবং এদের উৎপাদনও হয় প্রচুর।

3. উন্নত জলসেচ ব্যবস্থা : এই অঞ্চলে কম বৃষ্টিপাত হলেও জলসেচ ব্যবস্থার ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। এখানে ভৌমজলস্তর ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি অবস্থান করায় কূপ ও নলকূপের মাধ্যমে সহজেই ওই জল উত্তোলন করে সেচকার্যে ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়াও ভাকরা-নাঙ্গাল বহুমুখী নদী পরিকল্পনার অধীনে অসংখ্য নিত্যবহ খাল খনন করে এখানকার কৃষিজমিসমূহে জলসেচের সুব্যবস্থা করা হয়েছে। এর ফলে এখানে বছরে তিন-চার বার চাষ করা যায়।

4. উচ্চফলনশীল বীজের ব্যবহার : ড. বােরলগের নেতৃত্বে এই অঞ্চলে প্রথম উচ্চফলনশীল বীজের ব্যবহার শুরু হয়। ধান, গম, তুলাে ও অন্যান্য শস্যের ক্ষেত্রে উচ্চফলনশীল বীজের ব্যবহার এই অঞ্চলকে কৃষি উন্নতির শিখরে নিয়ে গেছে। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

5. যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় চাষ : পাঞ্জাব-হরিয়ানায় ট্রাক্টর, হারভেস্টার প্রভৃতির মাধ্যমে চাষ করা হয়। বৃহৎ জমিতে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে চাষবাস কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

⦿ অন্যান্য কারণ ➺

1. রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার : ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে একমাত্র পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি পরিমাণ রাসায়নিক সার ব্যবহৃত হয়। সেকারণে ভারতের এই দুটি রাজ্যে উচ্চফলনশীল বীজের ব্যবহার অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বেশি।

2. কৃষি প্রশিক্ষণ ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন : ঋতু, মাটির প্রকৃতি অনুযায়ী কৃষি পদ্ধতি অবলম্বন করার জন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এখানকার কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও প্রতিনিয়ত কৃষিতে উন্নতির লক্ষ্যে গবেষণা চালানাে হচ্ছে।

3. মূলধন : এখানকার অধিকাংশ কৃষক ধনী। তা ছাড়া জাতিগতভাবে এই অঞ্চলের অধিবাসীরা বেশি সংখ্যায় ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কর্মরত। সক্ষম অবস্থায় তারাই অবসরগ্রহণের সময় যে অর্থ পায়, তার অধিকাংশ লাভজনক কৃষিতে বিনিয়ােগ করে। ফলে কৃষিতে মূলধনের অভাব হয় না।

20. সবুজ বিপ্লবের ফলাফল আলোচনা করো।

⦿ সবুজ বিপ্লবের ফলাফল ➺
ভারতে সবুজ বিপ্লবের প্রধান রূপকার ছিলেন এম এস স্বামীনাথন। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উঃ প্রদেশের পশ্চিম অংশে জলসেচের সাহায্যে আধুনিক পদ্ধতিতে উচ্চফলনশীল বীজ, রাসায়নিক সার, কীটনাশক, ট্র্যাক্টর উন্নত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে কৃষিজাত দ্রব্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়, একে সবুজ বিপ্লব বলে। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

⦿ সুফল ➺
(i) কৃষিদ্রব্য উৎপাদন বৃদ্ধি : সবুজ বিপ্লবের ফলে খাদ্যশস্য উৎপাদন অনেকটা বৃদ্ধি পায়। 1960-61 খ্রিস্টাব্দে ভারত যেখানে মোট খাদ্য শস্যের উৎপাদন ছিল ৪.2 কোটি মেট্রিক টন সেখানে 2011-12 খ্রিস্টাব্দে বেড়ে হয় 25.7 মেট্রিক টন।

(ii) কৃষকের আয় বৃদ্ধি : ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে কৃষকের আয় বাড়ে এবং অর্থনৈতিক শ্রীবৃদ্ধি ঘটে। তবে তা বৃহৎ চাষীদের মধ্যে বেশি থাকে।

(iii) খাদ্য শস্যের আমদানি হ্রাস : স্বাধীনতার সময়ে এবং সবুজ বিপ্লবের আগে পর্যন্ত ভারতকে বিদেশ থেকে খাদ্য আমদানি করতে হবে। সবুজ বিপ্লবের প্রভাবে খাদ্যশস্য উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে ভারত এখন খাদ্যশস্যে স্বয়ম্ভর।

(iv) শিল্পের উন্নতি : সবুজ বিপ্লবের কারণে কৃষি যন্ত্রপাতি, সার, কীটনাশক, চাহিদা বহুগুণে বেড়ে যায়। ফলে এই সকল দ্রব্য উৎপাদনকারী শিল্পের উন্নতি ঘটে।

⦿ কুফল ➺

(i) শস্য উৎপাদনে বৈষম্য : সবুজ বিপ্লবের প্রভাব সারা ভারত জুড়েজু সকল ফসলের উপর পড়েনি। প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে গম, ধানে। মাঝারি মাপের ডাল জাতীয় শস্যে প্রভাব খুবই সামান্য। কার্পা স, পাট উৎপাদনে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

(ii) চাষীদের অর্থনৈতিক বৈষম্য : সবুজ বিপ্লবের সুবিধা সবচেয়ে বেশি ভাগ করে বৃহৎ চাষিরা। ফলে বৃহৎ চাষিদের উত্তরোত্তর শ্রীবৃদ্ধি ঘটতে থাকে, কিন্তু মাঝারি, প্রান্তিক চাষীদের অর্থনৈতিক অবস্থার খুব বেশি পরিবর্তন ঘটে না।

(iii) বেকারত্ব সৃষ্টি : কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহারের কারণে মজুরেজু র চাহিদা কমে। ফলে বেকারত্ব সৃষ্টি হয়। পাঞ্জাব, হরিয়ানায় বেকারত্বের সংখ্যা সামান্য বাড়লেও অঞ্চলগুলিতে এর বৃদ্ধির হার যথেষ্ট বেশি।

(iv) সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি : সবুজ বিপ্লবের প্রভাবে বৃহৎ এবং ক্ষুদ্র প্রান্তিক চাষিদের মধ্যে আর্থিক বৈষম্যের কারণে সামাজিক দূরদূত্ব সৃষ্টি হয়।

(v) বাস্তুতন্ত্রের উপর প্রভাব :
1. মাটির যান্ত্রিক রাসায়নিক ধর্মের পরিবর্তন ঘটায়।
2. মাটি ক্ষয় বৃদ্ধি করে।
3. ভৌমজলের অবনমন ঘটে।
4. বনভূমি অঞ্চল হ্রাস পায়।
5. অতিরিক্ত জলসেচের কারণে লবণ কৈশিক প্রক্রিয়ায় উপরে উঠে আসে। ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ

আড়ও পড়ুন :- Madhyamik Suggestion 2024

× close ad