মাধ্যমিক ২০২৬-এর জন্য জ্ঞানচক্ষু গল্পের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর

Published On:

মাধ্যমিক ২০২৬-এর জন্য জ্ঞানচক্ষু গল্পের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর (Suggestion) পান। আশাপূর্ণা দেবীর লেখা এই গল্পের ১, ৩ ও ৫ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর সহ সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিন।

ভূমিকা:
হ্যালো বন্ধুরা! তোমরা যারা ২০২৬ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছ, তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলা সিলেবাসের প্রথম গল্প, আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘জ্ঞানচক্ষু’ থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর (Suggestion) নিয়ে আমরা আলোচনা করব। এই অধ্যায়টি থেকে প্রায় প্রতি বছরই প্রশ্ন আসে, তাই ভালো করে প্রস্তুতি নেওয়া আবশ্যক।

এই পোস্টে আমরা ১, ৩ এবং ৫ নম্বরের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও তার আদর্শ উত্তরগুলি সাজিয়ে দিয়েছি, যা তোমাদের পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেতে সাহায্য করবে। চলো, শুরু করা যাক!

গল্পের উৎস:
‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পটি পড়ার আগে এর উৎস জেনে রাখা প্রয়োজন। কারণ, এটি প্রায়শই MCQ বা SAQ প্রশ্নে আসে।

আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পটি তাঁর ‘কুমকুম’ নামক ছোটদের গল্পসংকলন থেকে নেওয়া হয়েছে।

জ্ঞানচক্ষু: সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন (SAQ – প্রশ্নমান ১)

প্রশ্ন ২.১: ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পটি কার লেখা? এর উৎস উল্লেখ করো।
উত্তর: আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পটির উৎস হল তাঁর ‘কুমকুম’ নামক ছোটদের গল্পসংকলন।

প্রশ্ন ২.২: ‘কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল’— কোন কথা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল?
উত্তর: লেখকরা ভিন্ন জগতের প্রাণী—এটাই ছিল তপনের ধারণা। কিন্তু তার নতুন মেসোমশাই একজন লেখক শুনে বিস্ময়ে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল।

Read More:- মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান সাজেশন ২০২৬

প্রশ্ন ২.৪: ‘সত্যিকার লেখক’—এই উক্তির মধ্য দিয়ে তপনের মনের কোন্ ভাব প্রকাশিত হয়েছে বলে তোমার মনে হয়?
উত্তর: এই উক্তির মধ্য দিয়ে তপনের মনের বিস্ময় প্রকাশ পেয়েছে। লেখকরা আদৌ বাস্তব জগতের মানুষ নন—এই অলীক ভাবনা নতুন মেসোর সঙ্গে পরিচয়ে ভেঙে যাওয়াতেই এমন উক্তি।

প্রশ্ন ২.৫: ‘এবিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের’—কোন্ বিষয়ে তপনের সন্দেহ ছিল?
উত্তর: লেখকদের যে বাস্তব জীবনে কখনও দেখা যেতে পারে, তাঁরাও যে তপনের বাবা, ছোটোমামা বা মেজোকাকার মতোই সাধারণ মানুষ—সে-বিষয়ে তপনের সন্দেহ ছিল।

প্রশ্ন ২.৬: তপনের বাবা-কাকা-মামাদের সঙ্গে লেখক মেসোমশাইয়ের কী কী মিল আছে?
উত্তর: তপনের বাবা-কাকা-মামাদের মতোই তার লেখক মেসোমশাইও দাড়ি কামান, সিগারেট খান, খেতে বসে খাবার তুলে দেন, সময়মতো স্নান করেন, ঘুমান, খবরের কাগজ পড়েন, এমনকি সিনেমাও দেখেন।

প্রশ্ন ২.১২: ‘রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই’—কথাটির অর্থ কী?
উত্তর: কেবলমাত্র গুণী ব্যক্তিই অপরের গুণের কদর করতে পারে। তাই তপনের লেখা গল্পের প্রকৃত সমঝদার যদি কেউ থাকেন তবে তিনি তার লেখক মেসোমশাই।

প্রশ্ন ২.১৪: ‘তখন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায়’—কে, কেন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায়?
উত্তর: ছোটোমেসো তপনের লেখাটা ছাপানোর কথা বললে তপন প্রথমে সেটাকে ঠাট্টা বলে ভাবে। কিন্তু মেসোর মুখে করুণার ছাপ দেখে তপন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায়।

প্রশ্ন ২.১৫: ‘মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে সেটা’—উক্তিটি কার? কোনটা মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে?
উত্তর: উক্তিটি তপনের ছোটোমাসির। তাঁর মতে, তপনের লেখা গল্পটা ছোটোমেসো যদি একটু কারেকশন করে ছাপানোর ব্যবস্থা করে দেন, তবে সেটাই মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে।

প্রশ্ন ২.১৯: ‘নতুন মেসোকে দেখে জানলে সেটা’—তপন কী জেনেছিল?
উত্তর: তপন ছোটো থেকেই বহু গল্প শুনেছে ও পড়েছে। কিন্তু সে জানত না যে, সাধারণ মানুষ সহজেই তা লিখতে পারে। নতুন মেসোকে দেখে সেটাই জানল।

Read More:- মাধ্যমিক ২০২৬ ইংরেজি রাইটিং সাজেশন

প্রশ্ন ২.২৪: ‘বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের’—তপনের বুকের রক্ত ছলকে ওঠার কারণ কী ছিল?
উত্তর: গল্প ছাপানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে দীর্ঘদিন অদৃশ্য থাকার পর হঠাৎই একদিন ছোটোমাসি ও মেসো ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকা হাতে নিয়ে তপনদের বাড়িতে আসেন। তাতে তার গল্প ছাপার কথা ভেবে তপনের বুকের রক্ত ছলাত করে ওঠে।

প্রশ্ন ২.২৫: ‘পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে?’—এখানে কোন্ ঘটনাকে অলৌকিক ঘটনা বলা হয়েছে?
উত্তর: পত্রিকায় তপনকুমার রায়ের লেখা গল্প ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হওয়া এবং সেই পত্রিকা বহু মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার ঘটনাকেই ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে অলৌকিক ঘটনা বলা হয়েছে।

প্রশ্ন ২.২৬: ‘তা ঘটেছে, সত্যিই ঘটেছে’—কোন্ ঘটনার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: তপনের লেখক মেসো তার একটি গল্প ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকার সম্পাদককে বলে ছাপিয়ে দিয়েছিলেন। এই অবিশ্বাস্য, অভূতপূর্ব ঘটনার কথাই এখানে বলা হয়েছে।

প্রশ্ন ২.২৯: ‘ক্রমশ ও কথাটাও ছড়িয়ে পড়ে’—কোন্ কথা ছড়িয়ে পড়ে?
উত্তর: ‘সন্ধ্যাতারা’-য় তপনের গল্প প্রকাশকে কেন্দ্র করে বাড়িতে শোরগোল পড়লেও পরে জানা যায় যে, তার লেখাটি মেসো কারেকশন করে ছাপানোর ব্যবস্থা করেছেন—এই কথাটিই ছড়িয়ে পড়ে।

প্রশ্ন ২.৩২: ‘গল্পটা ছাপা হলে যে ভয়ঙ্কর আহ্লাদটা হওয়ার কথা, সে আহ্লাদ খুঁজে পায় না’—উদ্দিষ্ট ব্যক্তির আহ্লাদিত না-হতে পারার কারণ কী?
উত্তর: নিজের লেখা ছেপে বেরোলে যে-তীব্র আনন্দ হওয়ার কথা সেই আহ্লাদ খুঁজে পায় না তপন। তার কৃতিত্বের চেয়েও যেন বড়ো হয়ে ওঠে ছোটোমেসোর গল্প ছাপিয়ে দেওয়ার কৃতিত্ব।

প্রশ্ন ২.৩৩: ‘বোবার মতো বসে থাকে’—কে, কেন বোবার মতো বসে থাকে?
উত্তর: নিজের লেখা গল্প ছেপে বেরোনোর পর পড়তে গিয়ে তপন দেখে কারেকশনের নাম করে মেসো লেখাটা আগাগোড়াই বদলে দিয়েছেন। তাই স্তম্ভিত তপন তা দেখে বোবার মতো বসে থাকে।

প্রশ্ন ২.৩৭: ‘তপনের মনে হয় আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন’—দিনটিতে কোন্ উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছিল?
উত্তর: জীবনের প্রথম লেখা গল্প ছেপে বেরোনোর পর তপন দেখে কারেকশনের নামে নতুন মেসো পুরো গল্পটাই বদলে দিয়েছেন। গল্পের স্বকীয়তা হারানোর ব্যথিত তপনের সেই দিনটা সবচেয়ে দুঃখের মনে হয়েছে।

Read More:- Madhyamik English Writing 2026 | স্টোরি, লেটার, বায়োগ্রাফি সহ সম্পূর্ণ সাজেশন 

প্রশ্ন ২.৪৪: ‘নতুন মেসোকে দেখে জ্ঞানচক্ষু গেল তপনের’—এখানে কোন্ জ্ঞানের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: এখানে লেখকরাও যে নিছক সুস্থ-স্বাভাবিক ও সাধারণ মানুষ, তপনের এই জ্ঞানলাভের কথাই বলা হয়েছে।

প্রশ্ন ২.৪৯: ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে তপনের মেসো কোন্ মহত্ত্ব দেখিয়েছিলেন?
উত্তর: লেখক মেসোমশাই সকলের সামনে তপনের গল্পের প্রশংসা করেন এবং গল্পটি সংশোধন করে ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপিয়ে দেন।

প্রশ্ন ২.৫১: ‘বিকেলে চায়ের টেবিলে ওঠে কথাটা’—কোন্ কথাটা?
উত্তর: লেখক মেসোমশাইকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন যে একটা আস্ত গল্প লিখে ফেলেছে, এই কথাটা বিকেলে চায়ের টেবিলে উঠেছিল।

প্রশ্ন ২.৫৭: ‘একটু ‘কারেকশান’ করে ইয়ে করে দিলে ছাপাতে দেওয়া চলে’—কে, কী ছাপানোর কথা বলেছেন? (মাধ্যমিক, ২০১৮)
উত্তর: তপনের লেখক মেসোমশাই তপনের অপরিণত হাতের লেখা গল্পটি একটু ‘কারেকশান’ ও ‘ইয়ে করে’ ছাপানোর কথা বলেছেন।

প্রশ্ন ২.৬৩: তপনের গল্প পড়ে ছোটোমাসি কী বলেছিল? (মাধ্যমিক, ২০১৭)
উত্তর: তপনের গল্পটা সবটা না-পড়েঁই একটু চোখ বুলিয়ে পিঠ চাপড়ানোর সুরে ছোটোমাসি বলেছিল, তার লেখাটি ভালোই হয়েছে। খানিক রসিকতার সুরে এটা কোথাও থেকে টুকলিফাই করা কিনা সে-কথা ছোটোমাসি জানতে চেয়েছিল।

প্রশ্ন ২.৬৫: ‘এমন সময় ঘটল সেই ঘটনা’—কোন্ ঘটনার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: ছোটোমাসি ও লেখক মেসোমশাইয়ের ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকা নিয়ে তপনদের বাড়িতে আসার কথা প্রদত্ত অংশে বলা হয়েছে।

সঠিক উত্তরটি বেছে নাও (প্রশ্নমান – ১)

১. ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পটি কোন্ গল্পগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?
(ক) কুমকুম
(খ) বকুলকথা
(গ) পথের পাঁচালী
(ঘ) গল্পগুচ্ছ

২. গল্পের শুরুতে লেখকদের সম্পর্কে তপনের ধারণা কেমন ছিল?
(ক) তারা সাধারণ মানুষ
(খ) তারা খুব অহংকারী
(গ) তারা ভিন্ন জগতের জীব
(ঘ) তারা তপনের মতোই

৩. তপনের নতুন মেসো পেশায় কী ছিলেন?
(ক) ডাক্তার
(খ) অধ্যাপক ও লেখক
(গ) সম্পাদক
(ঘ) শিক্ষক

৪. ‘কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল’ – কোন্ কথা শুনে?
(ক) গল্প ছাপার কথা শুনে
(খ) নতুন মেসো একজন লেখক, একথা শুনে
(গ) বাড়ির লোকের ঠাট্টা শুনে
(ঘ) মাসির বিয়ের কথা শুনে

৫. তপনের লেখা গল্পটি যে পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল, তার নাম কী?
(ক) শুকতারা
(খ) আনন্দমেলা
(গ) দেশ
(ঘ) সন্ধ্যাতারা

৬. মেসোমশাই তপনের গল্পে কী করেছিলেন?
(ক) সামান্য বানান ভুল শুধরে দিয়েছিলেন
(খ) আগাগোড়া বদলে দিয়েছিলেন
(গ) কয়েকটি লাইন যোগ করেছিলেন
(ঘ) কিছুই করেননি

৭. তপনের লেখা প্রথম গল্পের বিষয়বস্তু ছিল –
(ক) রাজারানির গল্প
(খ) ভূতের গল্প
(গ) স্কুলে ভরতির দিনের অভিজ্ঞতা
(ঘ) তার নতুন মেসোর কথা

৮. ‘রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই’ – কথাটি কে বলেছিলেন?
(ক) তপন
(খ) তপনের মা
(গ) তপনের ছোটোমাসি
(ঘ) লেখক মেসো

৯. ছাপা গল্পে নিজের লেখা খুঁজে না পেয়ে তপনের কী মনে হয়েছিল?
(ক) খুব আনন্দ হয়েছিল
(খ) সে খুব গর্বিত হয়েছিল
(গ) দিনটিকে তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন মনে হয়েছিল
(ঘ) সে আরও লেখার উৎসাহ পেয়েছিল

১০. গল্পের শেষে তপন কী সংকল্প করেছিল?
(ক) আর কখনো গল্প লিখবে না
(খ) মেসোকে দিয়ে আবার লেখাবে
(গ) নিজে গিয়ে লেখা ছাপতে দেবে
(ঘ) মাসিকে বকাবকি করবে

১১. তপনের গল্প লেখা শুনে বাড়ির লোকের কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল?
(ক) তারা খুব প্রশংসা করেছিল
(খ) তারা ঠাট্টা-তামাশা করেছিল
(গ) তারা অবাক হয়েছিল
(ঘ) তারা তপনকে উৎসাহ দিয়েছিল

১২. তপনের মতে পৃথিবীতে ‘অলৌকিক ঘটনা’ কোনটি?
(ক) একজন লেখককে কাছ থেকে দেখা
(খ) তার লেখা গল্প ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হওয়া
(গ) মেসোর লেখা বই পড়া
(ঘ) মাসির বিয়ে হওয়া

১৩. ছোটোমাসি তপনের থেকে বয়সে কত বড়ো ছিলেন?
(ক) বছর পাঁচেকের
(খ) বছর দশেকের
(গ) বছর আষ্টেকের
(ঘ) প্রায় সমবয়সী

১৪. ‘শুধু এটাই জানা ছিল না’—তপনের কী জানা ছিল না?
(ক) গল্প কীভাবে লিখতে হয়
(খ) মানুষও গল্প লেখে
(গ) তার মেসো একজন লেখক
(ঘ) লেখকরাও সাধারণ মানুষ হয়

১৫. তপনের পুরো নাম কী ছিল?
(ক) তপন রায়
(খ) তপনকুমার রায়
(গ) তপনচন্দ্র রায়
(ঘ) তপন বিশ্বাস

উত্তরমালা

১. (ক) কুমকুম
২. (গ) তারা ভিন্ন জগতের জীব
৩. (খ) অধ্যাপক ও লেখক
৪. (খ) নতুন মেসো একজন লেখক, একথা শুনে
৫. (ঘ) সন্ধ্যাতারা
৬. (খ) আগাগোড়া বদলে দিয়েছিলেন
৭. (গ) স্কুলে ভরতির দিনের অভিজ্ঞতা
৮. (গ) তপনের ছোটোমাসি
৯. (গ) দিনটিকে তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন মনে হয়েছিল
১০. (গ) নিজে গিয়ে লেখা ছাপতে দেবে
১১. (খ) তারা ঠাট্টা-তামাশা করেছিল
১২. (খ) তার লেখা গল্প ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হওয়া
১৩. (গ) বছর আষ্টেকের
১৪. (খ) মানুষও গল্প লেখে (প্রকৃতপক্ষে, লেখকরা যে সাধারণ মানুষ, এটাই তার কাছে নতুন ছিল)
১৫. (খ) তপনকুমার রায়

জ্ঞানচক্ষু: ব্যাখ্যামূলক সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন (প্রশ্নমান ৩)

প্রশ্ন ৩.১: ‘কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল’ — কোন্ কথা শুনে কেন তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল?
উত্তর: তপন এতদিন ভেবে এসেছে লেখকরা বুঝি অন্য জগতের মানুষ। সাধারণ মানুষদের সঙ্গে তাদের কোনো মিলই নেই। তাই যখন সে শুনল যে তার ছোটো মেসোমশাই বই লেখেন, আর সেই বই ছাপাও হয় তখন তার বিস্ময়ের সীমা রইল না। নতুন মেসোমশাই একজন সত্যিকারের লেখক। এই আশ্চর্য খবরটা শুনেই তপনের চোখ মার্বেলের মতো গোল হয়ে গেল।

প্রশ্ন ৩.৩: ‘এ বিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের’—তপনের কোন্ বিষয়ে কেন সন্দেহ ছিল?
উত্তর: আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের তপন লেখকদেরকে এক অন্য জগতের বাসিন্দা বলে মনে করত। তাঁরাও যে আর-পাঁচজন সাধারণ মানুষের মতোই রোজকার জীবনযাপন করেন, তা ছিল তপনের কল্পনার বাইরে। সে আগে কোনোদিন কোনো লেখক কাছ থেকে দেখেনি। এমনকি লেখকদের যে দেখা পাওয়া যায় এ কথাও তার জানা ছিল না। তাই লেখকরা যে তার বাবা, কাকা, মামাদের মতোই সাধারণ মানুষ এ ব্যাপারে তার সন্দেহ ছিল।

Read More:- মাধ্যমিক বাংলা রচনা সাজেশন ২০২৬

প্রশ্ন ৩.১০: ‘বিকেলে চায়ের টেবিলে ওঠে কথাটা’—কোন্ কথা উঠেছিল?
উত্তর: ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে তপন লেখক-মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে একটি গল্প লেখে তার স্কুলে ভরতি হওয়ার দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে। তা ছোটোমাসির হাতে পড়ে এবং মাসি তা নিয়ে বেশ হইচই করে তাঁর লেখক-স্বামীকে গল্পটি দেখান। তাঁর স্বামী গল্প দেখে তপনকে ডেকে তার গল্পের প্রশংসা করেন এবং সামান্য কারেকশন করে দিলে তা ছাপার যোগ্য এ কথাও বলেন। মাসির অনুরোধে মেসো তপনকে কথা দেন ‘সন্ধ্যাতারা’-য় তার গল্প ছাপিয়ে দেবেন। এ কথাটাই চায়ের টেবিলে উঠেছিল।

প্রশ্ন ৩.১৪: তপনের প্রথম গল্প লেখার অভিজ্ঞতার বর্ণনা দাও।
উত্তর: ছোটোমেসোকে দেখার আগে তপন জানতই না যে সাধারণ মানুষের পক্ষেও গল্প লেখা সম্ভব। কিন্তু ছোটোমেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত তপন একদিন দুপুরে সবাই যখন ঘুমের ঘোরে, তখন চুপিচুপি তিনতলার সিঁড়িতে উঠে যায়। তারপর একাসনে বসে হোমটাস্কের খাতায় লিখে ফেলে আস্ত একটা গল্প। লেখা শেষ হলে নিজের লেখা পড়ে নিজেরই গায়ে কাঁটা দেয় তপনের, মাথার চুল খাড়া হয়ে ওঠে। উত্তেজিত তপন ছুটে নীচে এসে তার লেখক হওয়ার খবরটা ছোটোমাসিকে দেয়।

প্রশ্ন ৩.১৯: ‘ওর লেখক মেসো ছাপিয়ে দিয়েছে’—’ও’ কে? লেখক-মেসোর কী ছাপিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে? (১+২)
উত্তর: ‘ও’ বলতে আলোচ্য অংশে গল্পকার আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র বালক তপনের কথা বলা হয়েছে। তপনের লেখক-মেসো তাঁর পরিচয় ও প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তপনের লেখা গল্প ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপিয়ে দিয়েছিলেন। এই সত্য জানার পর তপনের কোনো কোনো আত্মীয় তার কৃতিত্বকে খাটো করে দেখিয়ে প্রশ্নোদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছিলেন।

প্রশ্ন ৩.২১: ‘আজ আর অন্য কথা নেই,’—’আজ’ দিনটির বিশেষত্ব কী? সেদিন আর অন্য কথা নেই কেন? (১+২)
উত্তর: আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে ‘আজ’ বলতে সেই দিনটির কথা বোঝানো হয়েছে, যেদিন তপনের মাসি ও মেসো ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকার সেই সংস্করণটি নিয়ে এলেন, যাতে তপনের লেখা গল্প প্রকাশিত হয়েছিল। বালক তপনের লেখা গল্প যে সত্যিই কোনো পত্রিকায় ছাপা হতে পারে, তা কেউই বিশ্বাস করেনি। কিন্তু যেদিন সত্যিই সেই অবিশ্বাস্য ঘটনাটি ঘটল, সেদিন সকলের মুখে মুখে বারবার এই ঘটনার কথাই আলোচিত হচ্ছিল।

প্রশ্ন ৩.২৩: ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় তপনের গল্প ছেপে বেরোয় তবু তপনের এত দুঃখ হয়েছিল কেন?
উত্তর: তপন ভাবত লেখকরা কোনো স্বপ্নের জগতের মানুষ। কিন্তু লেখক-মেসোকে দেখে তার ভুল ভাঙে। উৎসাহিত তপন নিজেই লিখে ফেলে একটা গল্প। ছোটোমেসোর উদ্যোগে সামান্য কারেকশনের পর সেটা ছেপেও বেরোয় ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায়। পত্রিকার সূচিপত্রে নিজের নাম ছাপার অক্ষরে দেখে আনন্দে আত্মহারা হয় তপন। কিন্তু গল্পটা পড়া শুরু করতেই সে বুঝতে পারে কারেকশনের নাম করে ছোটোমেসো তার গল্পটা আগাগোড়াই পালটে দিয়েছেন। নিজের লেখার পরিবর্তে একটা সম্পূর্ণ অচেনা লেখা দেখে তপনের আনন্দ মিলিয়ে যায়।

প্রশ্ন ৩.২৪: ‘শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন,’—দুঃখের মুহূর্তটি কী? তপন কী সংকল্প করেছিল? (১+২)
উত্তর: ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের নায়ক তপনের জীবনের সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্তটি একপলকে দুঃখের মুহূর্তে পর্যবসিত হয়। কারণ সে প্রকাশিত গল্পটি পড়তে গিয়ে টের পায়, লেখক-মেসো গল্পটিকে সংশোধনের নামে প্রায় সম্পূর্ণ বদলে ফেলেছেন। এ গল্পকে আর যাই হোক তার নিজের লেখা বলা যায় না। এই ঘটনায় তপন সংকল্প করেছিল যে, যদি কোনোদিন নিজের কোনো লেখা ছাপতে দেয়, তবে নিজে গিয়ে ছাপতে দেবে। ছাপা হোক বা না-হোক অন্তত তাকে এ কথা শুনতে হবে না যে, কেউ তার লেখা প্রভাব খাটিয়ে ছাপিয়ে দিয়েছে।

প্রশ্ন ৩.৩৩: ‘সত্যিই তপনের জীবনের সবচেয়ে সুখের দিনটি এল আজ’—তপনের জীবনে সুখের দিনটি কীভাবে এল? গল্পের শেষে সুখের দিনটি কীভাবে দুঃখের দিন হয়ে উঠল? (১+২)
উত্তর: লেখক-মেসোমশাইয়ের সৌজন্যে ও বদান্যতায় ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় তপনের গল্পটি প্রকাশিত হয়। ছাপার অক্ষরে তপনকুমার রায়ের গল্প প্রকাশ পাওয়ার এই দিনটি প্রাথমিকভাবে তার জীবনে সবচেয়ে সুখের দিন হয়ে উঠেছিল। (দ্বিতীয় অংশটির জন্য ৩.২৪ নং প্রশ্নের উত্তর দ্রষ্টব্য।)

Read More:- মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন ২০২৬

প্রশ্ন ৩.৩৬: ‘বিষণ্ণ মন নিয়ে বসে আছে এমন সময় ঘটল সেই ঘটনা’—কেন মন বিষণ্ণ হয়েছিল? এমন সময় কী ঘটেছিল? (১+২)
উত্তর: লেখক-মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন একটি গল্প লিখে ফেলে। মেসো ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তপনের গল্পটি নিয়ে চলে যান। এবার তপন অধীর আগ্রহে দিন গোনে। ক্রমে হতাশ হয়ে ছাপানোর আশা ছেড়ে দেওয়ায়, তার মন দুঃখে বিষণ্ণ হয়ে ওঠে। তপন যখন প্রায় আশা ছেড়ে দিয়েছে। ইতিমধ্যে যদিও সে আরও দু-তিনটে গল্প লিখে ফেলেছে। ঠিক এমন সময়ে ছোটোমাসি আর মেসো একদিন বাড়িতে বেড়াতে আসেন। তাঁদের হাতে ধরা একটি পত্রিকা, নাম ‘সন্ধ্যাতারা’। সেখানে সত্যিই ছাপা হয়েছে তপনকুমার রায়ের গল্প। অবশেষে তপনের স্বপ্নপূরণ ঘটানো, এই ঘটনাটাই ঘটেছিল।

জ্ঞানচক্ষু: রচনাধর্মী প্রশ্ন (LAQ – প্রশ্নমান ৫)

প্রশ্ন ৪.১: ‘কিন্তু নতুন মেসোকে দেখে জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তপনের’—নতুন মেসোর পরিচয় দাও। তাকে দেখে তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে যাওয়ার কারণ কী? (১+৪)
উত্তর: ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে তপনের নতুন মেসো তার ছোটোমাসির স্বামী। তিনি একজন লেখক, বই লেখেন। ইতিমধ্যে তাঁর অনেক বই ছাপাও হয়েছে। সর্বোপরি তিনি একজন প্রফেসর। তপনের ছোটোমাসির বিয়ের পর নতুন মেসো যে লেখক, এ কথা শুনে তার কৌতূহলের অন্ত ছিল না। তার কাছে লেখক মানে ভিন গ্রহের কোনো মানুষ, যারা সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে। একজন লেখককে যে এত কাছ থেকে দেখা যায় কিংবা লেখকরা যে তপনের বাবা, ছোটোমামা বা মেজোকাকুদের মতো সাধারণ মানুষ হতে পারে, এ বিষয়েও তার যথেষ্ট সন্দেহ ছিল। কিন্তু তার সেই ধারণাগুলো ভেঙে গেল, যখন দেখল তার ছোটোমেসোও তার বাবা, ছোটোমামা বা মেজোকাকুর মতোই দাড়ি কামান, সিগারেট খান, খেতে বসে অর্ধেক খাবার তুলে দেন, সময়মতো স্নান করেন ও ঘুমান। ছোটোমামাদের মতোই খবরের কাগজের কথায় তর্ক ও শেষ পর্যন্ত দেশ সম্পর্কে একরাশ হতাশা ঝেড়ে ফেলে সিনেমা দেখতে বা বেড়াতে চলে যান। এসব বিষয়ে অন্যদের সঙ্গে মেসোর মিল দেখে তপনের জ্ঞানচক্ষু উন্মোচিত হয়। সে বুঝতে পারে লেখকরা আকাশ থেকে পড়া জীব নয়, নিছকই মানুষ।

প্রশ্ন ৪.৩: ‘আর সবাই তপনের গল্প শুনে হাসে’—সকলের তপনের গল্প শুনে হাসার কারণ কী? তার গল্পের যথাযথ মূল্যায়ন কে, কীভাবে করেছিলেন? (২+৩)
অথবা, ‘বিকেলে চায়ের টেবিলে ওঠে কথাটা’—চায়ের টেবিলে ওঠা কথাটি সম্পর্কে বাড়ির মানুষদের প্রতিক্রিয়া কী ছিল? নতুন মেসোরাই-বা এই ঘটনায় বক্তব্য কী ছিল? (২+৩)
উত্তর: ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প থেকে গৃহীত অংশটিতে ‘সবাই’ বলতে তপনের বাড়ির লোকজনকে বোঝানো হয়েছে। বাড়ির বড়োদের চোখে সে ছিল নিতান্তই ছোটো, তার গুরুত্ব কম। সে যে রাতারাতি একটা গল্প লিখে ফেলতে পারে, আর সে-গল্প যে ছাপানোর যোগ্য হতে পারে তা প্রথমে কেউই বিশ্বাস করতে পারেনি। তাই সকলে তপনের গল্প শুনে হেসেছিলেন। বাড়ির সকলে তার লেখা গল্পকে গুরুত্ব না-দিলেও, তার লেখক নতুন মেসো কিন্তু এই গল্পের যথাযোগ্য মর্যাদা দিয়েছিলেন। তপনের মাসি তার গল্পটি মেসোকে দেখালে, তিনি তা একটি পত্রিকায় প্রকাশ করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। বিকেলে চায়ের টেবিলে সকলে তপনের লেখা গল্প নিয়ে হাসাহাসি করলেও, লেখক-মেসো কিন্তু তপনের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন যে, তপনের লেখার হাত ও দেখার চোখ দুই-ই আছে। কারণ তার বয়সি ছেলেমেয়েরা সাধারণত রাজারানি, খুন, জখম, অ্যাকসিডেন্ট, নয়তো না-খেতে পেয়ে মরে যাওয়া প্রভৃতি বিষয়ে গল্প লেখে। কিন্তু তপন সেসব গল্প না-লিখে তার ভরতি হওয়ার দিনের অভিজ্ঞতা আর অনুভূতি নিয়ে গল্প লিখেছে। তপনের লেখক-মেসোর মতে, এ খুব বিরল লক্ষণ। এইভাবে তপনের মেসো তার লেখা গল্পের মূল্যায়ন করেছিলেন। তবে তপনের গল্পে আনাড়ি হাতের ছাপ থাকায়, তিনি তা সংশোধন করে দিয়েছিলেন।

প্রশ্ন ৪.৮: ‘তপন আর পড়তে পারে না। বোবার মতো বসে থাকে’—তপনের এরকম অবস্থার কারণ বর্ণনা করো। (মাধ্যমিক, ২০১৮)
(এই প্রশ্নের উত্তর অন্যান্য প্রশ্নের উত্তরে অন্তর্ভুক্ত)

প্রশ্ন ৪.১৮: ‘হঠাৎ ভয়ানক একটা উত্তেজনা অনুভব করে তপন’—তপন কেন উত্তেজনা অনুভব করে এবং তা ‘ভয়ানক’ কেন? (২+৩)
উত্তর: …নিজের সৃষ্টি আগাগোড়া পড়ে তার শরীরে শিহরণ খেলে যায়। সে ভাবতেই পারে না, এত সুন্দর একটা গল্প সে নিজেই লিখতে পারবে। নিজস্ব ভাব ও ভাবনার বাণীমূর্তিই আলোচ্য অংশে ভয়ানক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে, যা তার গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে।

Read More:- Madhyamik Bengali 2026 Suggestion

প্রশ্ন ৪.৮ (পুনরায়): নতুন মেসোর চরিত্রটি আলোচনা করো। জ্ঞানচক্ষু
উত্তর: কথাশিল্পী আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের মূল চরিত্র তপনের আত্মোপলব্ধির পিছনে যে-চরিত্রটির প্রত্যক্ষ প্রভাব রয়েছে, তিনি হলেন তপনের নতুন মেসো। এই মেসো পেশায় অধ্যাপক এবং লেখক। তাঁর লেখক পরিচয় তপনের মনের বহু ভুল ধারণা ভেঙে দেয়। অধ্যাপক ও লেখক হওয়া সত্ত্বেও মেসো ব্যক্তিটি বেশ মিশুকে, ফুর্তিবাজ। তিনি শ্যালক-শ্যালিকাদের সঙ্গে গল্প করেন, তর্ক করেন, কবজি ডুবিয়ে খাওয়া-দাওয়া করেন, সিনেমায় যান ও বেড়াতেও যান। শ্বশুরবাড়ির সদস্য হিসেবে তপনের প্রথম লেখা গল্পের তিনি প্রশংসা করেন ও তা ছাপার দায়িত্ব নিয়ে নেন। শুধু যে তপনকে উৎসাহ দিতে ছোটোমেসো তার গল্পটা ছাপিয়ে দেন, এমনটা নয়। শ্বশুরবাড়িতে নিজের প্রতিপত্তি জাহির করতেও তিনি এ কাজ করেন। তপনের গল্প যাতে প্রসিদ্ধি পায়, তাই সংশোধনের নামে গল্পের খোলনলচে বদলে দেন মেসো। তাঁর উদ্দেশ্য হয়তো মহৎ ছিল। কিন্তু তাঁর এই উদ্যোগ তপনের লেখকসত্তাকে আঘাত করে। একদিকে চারিত্রিক উদারতায় ও মহত্ত্বে আবার অন্যদিকে অসতর্কতায়, তপনের নতুন মেসো এক পরিপূর্ণ রক্তমাংসের চরিত্র হয়ে ওঠেন। যদিও একজন লেখক হয়ে অন্য লেখকের এই আত্মসমর্পণ ও অহংবোধকে উপলব্ধি করা তাঁর উচিত ছিল।

প্রশ্ন ৪.৭: ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে তপন চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো।
উত্তর: আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু‘ গল্পের তপনের মধ্যেও সব শিশুর মতোই আশা-আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন-স্বপ্নভঙ্গ, কল্পনা-বাস্তব, আনন্দ-অভিমানের টানাপোড়েন দেখা যায়। তবে তার চরিত্রের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য তাকে আলাদা করে রাখে। তপন মনে মনে তার কল্পনার জগৎকে সাজিয়ে নিতে ভালোবাসে। তাই তার কল্পনার জগতে লেখকরা ছিলেন ভিন গ্রহের প্রাণী। সাধারণ মানুষদের সঙ্গে তাদের বুঝি বা কোনো মিলই নেই। সাহিত্যের প্রতি তপনের ঝোঁক ছোটোবেলা থেকেই। সে অনেক গল্প শুনেছে ও পড়েছে। লেখকদের সম্পর্কেও তার কৌতূহল অসীম। ছোটোমেসোকে দেখে তার মনেও লেখক হওয়ার ইচ্ছে জাগে। উৎসাহী হয়ে বেশ কয়েকটা গল্পও লিখে ফেলে। বয়স অনুপাতে তপন একটু বেশিই সংবেদনশীল। সমবয়সি ছেলেমেয়েদের মতো রাজারানি, খুন-জখম ও অ্যাকসিডেন্ট নিয়ে না-লিখে, তার ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতা আর অনুভূতি নিয়ে গল্প লেখে। তা নিয়ে বাড়ির লোকের ঠাট্টাতামাশা বা মাসি-মেসোর উৎসাহদান—কোনোটাতেই সে প্রকাশ্যে তার প্রতিক্রিয়া দেখায় না। এটা তার অন্তর্মুখী স্বভাবেরই পরিচয়। তাই কারেকশনের নামে মেসো তার গল্পটা আগাগোড়া বদলে দিলে তপন তার কষ্ট লুকাতে ছাদে গিয়ে কাঁদে। তপনের আত্মমর্যাদা বোধ ছিল প্রবল। তার গল্প ছোটোমেসো কারেকশনের নাম করে আগাগোড়াই বদলে দিলে তপনের লেখকসত্তা আহত হয়। সে মনে মনে শপথ নেয়, ভবিষ্যতে লেখা ছাপাতে হলে সে নিজে গিয়ে লেখা দিয়ে আসবে পত্রিকা অফিসে। তাতে যদি তার মতো নতুন লেখকের লেখা ছাপা না-হয়, তাতেও দুঃখ নেই।

উপসংহার:
আশা করি, ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের এই প্রশ্ন-উত্তরগুলো তোমাদের প্রস্তুতিতে অনেক সাহায্য করবে। এই প্রশ্নগুলি ভালো করে অনুশীলন করলে মাধ্যমিক পরীক্ষায় তোমরা অবশ্যই ভালো ফল করতে পারবে। গল্পটি ভালোভাবে পড়ো এবং উত্তরগুলো নিজের ভাষায় লেখার চেষ্টা করো।

তোমাদের পরীক্ষার জন্য অনেক শুভেচ্ছা রইল!

Leave a Comment

× close ad