ভোটার কার্ডে আর গ্রাহ্য নয় আধার কার্ড! নতুন নির্দেশ জারি করল নির্বাচন কমিশন ২০২৫

Last Updated:

ভারতীয় নির্বাচন কমিশন ২০২৫ সালে একটি বড় সিদ্ধান্ত নিল — এখন থেকে ভোটার কার্ডে বয়স সংশোধন বা নতুন নাম তোলার ক্ষেত্রে আধার কার্ড আর গ্রহণযোগ্য নয়। এই নতুন নিয়ম অনুযায়ী, দেশের সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের (CEO) কাছে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। এর ফলে, যারা বয়স সংশোধন বা নতুন ভোটার হিসেবে নাম তোলার আবেদন করতে চান, তাঁদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন।

কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো?

নির্বাচন কমিশনের মতে, আধার কার্ডে জন্মতারিখ নিয়ে অসংখ্য অসঙ্গতি লক্ষ্য করা গেছে। অনেক মানুষ অনুমানের ভিত্তিতে নিজেদের জন্মতারিখ উল্লেখ করে আধার তৈরি করিয়েছেন। এই সমস্যার কারণে ভোটার তালিকায় ভুল তথ্য উঠে আসছে, ফলে নির্বাচনী তালিকার নির্ভরযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (UIDAI) নিজেও কমিশনকে জানিয়েছে যে আধার কার্ড জন্মতারিখের প্রমাণপত্র নয়, বরং এটি শুধুমাত্র পরিচয়ের প্রমাণ (Proof of Identity) হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া উচিত।

ভোটার তালিকা ত্রুটিমুক্ত ও সঠিক করতে নির্বাচন কমিশন এই নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে। ভোটার কার্ডে আর গ্রাহ্য নয় আধার কার্ড!

এখন কোন কোন নথি বয়সের প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য?

নির্বাচন কমিশন নিম্নলিখিত নথিগুলিকে গ্রহণযোগ্য বলেছে বয়স যাচাইয়ের ক্ষেত্রে:

  1. জন্ম সার্টিফিকেট (Birth Certificate) — পৌরসভা বা জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধকের অফিস থেকে ইস্যু করা।
  2. শিক্ষা বোর্ডের মার্কশিট/সার্টিফিকেট — দশম বা দ্বাদশ শ্রেণি (CBSE, ICSE, WBCHSE ইত্যাদি)।
  3. অষ্টম বা পঞ্চম শ্রেণির মার্কশিট — যেখানে জন্মতারিখ উল্লেখ থাকে।
  4. প্যান কার্ড (PAN Card)
  5. ভারতীয় পাসপোর্ট (Indian Passport)
  6. ড্রাইভিং লাইসেন্স (Driving License)
  7. সরকারি হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার প্রদত্ত জন্মতারিখের শংসাপত্র

যদি কেউ আধার কার্ড জমা দেন, তবে তাকে উপরের তালিকাভুক্ত নথিগুলোর মধ্যে অন্তত একটি বিকল্প প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে। না হলে আবেদন বাতিল হয়ে যাবে।

আগে কি ছিল? ভোটার কার্ডে আর গ্রাহ্য নয় আধার কার্ড!

এর আগে, ভোটার কার্ড সংশোধন কিংবা নতুন ভোটার নাম তোলার জন্য আধার কার্ড অনেক ক্ষেত্রেই মূল ডকুমেন্ট হিসেবে গ্রহণ করা হতো। কিন্তু এতদিন পর নির্বাচন কমিশন বুঝতে পেরেছে — আধার নির্ভর করে থাকলে ভুয়া জন্মতারিখ বা বিভ্রান্তিকর তথ্যের আশঙ্কা থেকে যায়।

এই পরিবর্তনের প্রভাব

এই সিদ্ধান্তের ফলে:

  • ভোটার তালিকা আরও স্বচ্ছ ও নির্ভুল হবে।
  • ভুয়া তথ্য দেওয়া অনেকটাই কঠিন হবে।
  • পরিচয় যাচাইয়ে আধার কাজ করবে ঠিকই, কিন্তু বয়সের প্রমাণে নয়।

 

Read More:- কৃষক বন্ধু নতুন পোর্টাল চালু 2025

যারা নতুন ভোটার নাম তুলতে চাচ্ছেন বা যাঁদের জন্মতারিখ সংশোধন করতে হবে, তাঁদের এখন থেকেই উচিত — উল্লিখিত যেকোনো আধারবিহীন জন্মতারিখের নথি প্রস্তুত রাখা

আপনি কী করবেন?

  1. যদি আপনার ভোটার কার্ডে বয়স ভুল থাকে, তবে সংশোধনের জন্য আবেদন করার সময় আধার না দিয়ে উপরোক্ত যেকোনো গ্রহণযোগ্য নথি দিন
  2. নতুন ভোটার নাম তুলতে গেলেও এখন থেকে জন্ম সার্টিফিকেট, বোর্ডের মার্কশিট ইত্যাদি রাখতে হবে।
  3. Pan Card, Passport বা DL থাকলেও চলবে — কিন্তু শুধুমাত্র আধার চলবে না। ভোটার কার্ডে আর গ্রাহ্য নয় আধার কার্ড!

উপসংহার

নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে আরও নির্ভরযোগ্য ও স্বচ্ছ করতে সহায়তা করবে। আধার কার্ড এখন শুধু পরিচয়পত্র হিসেবে গণ্য হলেও, জন্মতারিখের ক্ষেত্রে এর ভূমিকা সীমিত করা হয়েছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আপডেট, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম বা বয়স সংশোধনের আবেদনকারীদের জন্য।

দয়া করে এই তথ্যটি শেয়ার করুন আপনার পরিবারের সদস্য বা পরিচিতদের সাথে, যাতে ভুল তথ্য দিয়ে কেউ আবেদন না করেন। ভোটার কার্ডে আর গ্রাহ্য নয় আধার কার্ড!

× close ad