হারিয়ে যাওয়া কালি কলম Madhyamik Bengali Suggestion 2024

Published On:

হারিয়ে যাওয়া কালি কলম Madhyamik Bengali Suggestion 2024

হারিয়ে যাওয়া কালি কলম Madhyamik Bengali Suggestion 2024 | মাধ্যমিক হারিয়ে যাওয়া কালি কলম সাজেশন ২০২4 যদি যদি কোন কিছু বাদ পড়ে যায় তাহলে কিন্তু তোমরা অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে জানাবে। আমরা এই যে সাজেশন তৈরি করে দিলাম এটা কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ সমস্ত পরীক্ষার্থীদের জন্য তো অবশ্যই কিন্তু full সাজেশনটা আপনারা কমপ্লিট করে নেবেন কারণ সমস্ত প্রশ্ন মাথায় রেখে এই সাজেশনটা তোমাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে নিচে পিডিএফও দেওয়া রয়েছে অবশ্যই তোমরা পিডিএফ তাকে করে নেবে এবং তোমাদের বন্ধু-বান্ধবের সাথে অবশ্যই শেয়ার করে দেবে। Madhyamik Bengali হারিয়ে যাওয়া কালি কলম Suggestion 2024

যদি কারো কোন কিছু জানার থাকে বা বলার থাকে অবশ্যই নিজের কমেন্ট বক্সটিতে ক্লিক করে কমেন্ট করে দেবেন তাহলে আমাদেরও বুঝতে সুবিধা হবে কার কোথায় অসুবিধা রয়েছে বা সুবিধা হচ্ছে। Madhyamik Bengali হারিয়ে যাওয়া কালি কলম Suggestion 2024

আশা করব সম্পূর্ণ সাজেশনটা তোমাদের খুব কাজে আসবে তাই অনেক কষ্ট করে এই সাজেশনটা বানানো হয়েছে।

Madhyamik Bengali হারিয়ে যাওয়া কালি কলম Suggestion 2024 দেবে তাদের জন্য কিন্তু এই অংকে সাজেশনটা তৈরি করা হয়েছে। ২০২৩ এর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের যদি আরও কোন সাজেশন লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করুন বা আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন এবং সার্চ বক্সে আপনি আপনার প্রশ্নটি লিখুন দেখবেন তার উত্তর নিচে আপনারা পেয়ে যাবেন এবং সমস্ত সাবজেক্টের সাজেশন প্রশ্ন উত্তর পাওয়ার জন্য আমাদের ওয়েব পেজটাকে বুক মার্ক করে রাখুন তাতে তোমাদের সুবিধা হবে।

চাইলে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলেও যুক্ত হতে পারো টেলিকম চ্যানেলের লিংক নিচে দেওয়া রয়েছে ধন্যবাদ। Madhyamik Bengali জ্ঞানচক্ষু Suggestion 2024

মাধ্যমিক হারিয়ে যাওয়া কালি কলম সাজেশসাজেশন ২০২৪


(প্রশ্নমান – ৩) হারিয়ে যাওয়া কালি কলম (শ্রীপান্থ ) প্রশ্ন উত্তর – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৪ – Madhyamik Bengali Suggestion 2024

1. ‘সেটা অবশ্য ইচ্ছাকৃত নয়’— কোনটি ইচ্ছাকৃত নয়?
উত্তর : ভিড় বাসে-ট্রামে যাতায়াতের ফলে অনেক সময় মেয়েরা খোপায় কলম ধারণ করেন, এটি ইচ্ছাকৃত নয়।

2. ‘নামটা রবীন্দ্রনাথের দেওয়াও হতে পারে’—কোন্ নামের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : প্রাবন্ধিক অনুমান করেছিলেন যে, ফাউন্টেন পেনের নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘ঝরনা কলম’ দিয়েছিলেন।

3. গ্রামে কেউ দু-একটা পাস দিতে পারলে বুড়ো-বুড়িরা কী বলতেন?
উত্তর : গ্রামে কেউ দু-দুএকটা পাস দিতে পারলে বুড়ো-বুড়িরা আশীর্বাদ করে বলতেন ‘বেঁচে থাকো বাছা, তোমার সোনার দোয়াত-কলম হোক’।

4. ‘কিন্তু সে সব ফাঁকি মাত্র’—কোন্সব ফাঁকি?
উত্তর : ইদানিং অনেক অফিসের টেবিলের ওপর সাজিয়ে রাখা দোয়াত-কলম বলে যে বস্তুগুলোকে মনে হয়, সেগুলি আসলে ফাঁকি মাত্র। প্রকৃতপক্ষে ওগুলি হল ছদ্মবেশী বলপেন।

5. ‘আমরা তাতে হোমটাস্ক করতাম’—বক্তা কীসে হোমটাস্ক করতেন?
উত্তর : কলাপাতা কাগজের মতো করে কেটে নিয়ে প্রাবন্ধিক তাতে হোমটাস্ক করতেন।

6. ‘কলম তাদের কাছে আজ অস্পৃশ্য’—কাদের কাছে কেন কলম অস্পৃশ্য?
উত্তর : কলম আজ এতটাই সহজলভ্য ও সস্তা হয়ে উঠেছে যে, পকেটমারেরাও বিমুখ হয়েছে। তাদের কাছে কলম আজ অস্পৃশ্য।

7. ‘বাবুকুইল ড্রাইভারস’—কথাটি কে কাদের বলতেন?
উত্তর : লর্ড কার্জন বাঙালি সাংবাদিকদের গরম গরম ইংরেজি বলা দেখে তাদের এ কথা বলতেন।

8. কালি তৈরির পদ্ধতি সংক্রান্ত ছড়াটি লেখো। অথবা এই ছিল তাদের ব্যবস্থা’ – কালি তৈরির ব্যবস্থাটি লেখো।
উত্তর : ‘তিল ত্রিফলা শিমুল ছালা/ ছাগ দুগ্ধেদু করি মেলা/লৌহ পাত্রে লোহায় ঘসি/ছিড়ে পত্র না ছাড়ে মসি’।

9. ‘তার সূচনা কিন্তু হাতে লেখা পাণ্ডুলিপির পাতায়’—এভাবে কী সূচনা হয়েছিল?
উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বেশি বয়সে চিত্রশিল্পী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। তাঁর এই চিত্রশিল্পের সূচনা হয় পান্ডুলিপির সাদা পাতায় আঁকিবুকির মধ্যে।

10. কুইল কী?
উত্তর : পালকের কলমের ইংরেজি নাম হল কুইল।

11. ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় রচিত দুটিদু উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর : ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় রচিত দুটিদু উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল—‘কঙ্কাবতী’ ও ‘ডমরুচরিত’।

12. ‘তুমি সবল, আমি দুর্ব দুল’—কোন্প্রসঙ্গে এই উক্তি?
উত্তর : প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ বলপেনের কাছে আত্মসমর্পণ প্রসঙ্গে ফরাসি কবির এই কবিতাটিকে উত্থাপন করেছেন।

13. ‘সেই আঘাতেরই পরিণতি নাকি তার মৃত্যু ’–কোন্আঘাতের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : স্বনামধন্য লেখক ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের নিজের হাতের কলম অসাবধানবশত তাঁর বুকে ফুটে যায়। সেই কলমের আঘাতেই তাঁর মৃত্যু হয়।

14. ‘পুকুরে তা ফেলে দিয়ে আসতাম’—বক্তা কী ফেলে দিতেন?
উত্তর : শৈশবে প্রাবন্ধিক কলাপাতায় হোমটাস্ক করতেন এবং স্কুল থেকে ফেরার পথে সেগুলিকে পুকুরে ফেলে দিয়ে আসতেন।

15. লিপি-কুশলী বা ক্যালিগ্রাফিস্ট কাদের বলে?
উত্তর : যাঁরা লেখার পারদর্শী বা কলমবাজ তাদের লিপি-কুশলী বা ক্যালিগ্রাফিস্ট বলে।

16. ‘সেই আঘাতেরই পরিণতি নাকি তার মৃত্যু ’–কোন্আঘাতের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : স্বনামধন্য লেখক ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের নিজের হাতের কলম অসাবধানবশত তাঁর বুকে ফুটে যায়। সেই কলমের আঘাতেই তাঁর মৃত্যু হয়।

17. ‘সে ছবি কতখানি যন্ত্রের, আর কতখানি শিল্পীর’— কোন্ছবির কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : কম্পিউটারের মাধ্যমে যে ছবিগুলি তৈরি করা হয়, তা হল কৃত্রিম ও যান্ত্রিক। সেখানে শিল্পের শিল্প সত্তা অদৃশ্য।

18. এখন পালকের কলম কোথায় দেখা যায়?
উত্তর : কেবলমাত্র পুরোনো দিনের তৈলচিত্রে কিংবা ফটোগ্রাফিতেই এখন পালকের কলম দেখা যায়।

19. “কমপিউটার তাদের জাদুঘদুরে পাঠাবে বলে যেন প্রতিজ্ঞা করেছে— ‘কাদের জাদুঘদুরে পাঠানোর জন্য প্রতিজ্ঞা করেছে?”
উত্তর : কম্পিউটার অতীতের নানা স্মৃতিবহ কলমকে জাদুঘদুরে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে।

20. ‘বড়োরা শিখিয়ে দিয়েছিলেন’—বড়োরা কী শিখিয়ে দিয়েছিলেন?
উত্তর : বাঁশের কলমের মুখটা ছুঁচালো করার সঙ্গে সঙ্গে চিরে দেওয়া প্রয়োজন, যাতে কালি চুঁইয়ে পড়ে—এই কথাটি প্রাবন্ধিককে বড়োরা শিখিয়ে দিয়েছিলেন।

21. ‘একসময় বলা হত’ — কী বলা হত?
উত্তর : একসময় বলা হত ‘কলমে কায়স্থ চিনি, গোঁফেতে রাজপুত’

22. ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কারক কে?
উত্তর : ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কারক হলেন— লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান।

23. ‘বাংলায় একটা কথা চালুছিল’ – চালুকথাটি কী?
উত্তর : চালুকথাটি হল—’কালি নেই কলম নেই, বলে আমি মুনসী’।

24. ‘ফাউন্টেন পেনের এক বিপদ’—বিপদটি কী?
উত্তর : ফাউন্টেন পেনের সবচেয়ে বড়ো বিপদ হল, এটি লেখককে নেশাগ্রস্ত করে তোলে।

25. হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধে লেখক একটি কলমের সর্বোচ্চ কত দামের কথা বলেছিলেন?
উত্তর : হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধের লেখক একটি কলমের সর্বোচ্চ দাম আড়াই হাজার পাউন্ড বলেছিলেন।

26. ‘সে কলমের সোনার অঙ্গ হিরের হৃদয়’—কোন্কলমের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : প্রবন্ধে উল্লিখিত সবচেয়ে দামি কলম অর্থা ৎ আড়াই হাজার পাউন্ডের কলমের কথা বলা হয়েছে।

27. ‘যন্ত্রটা এক ধরনের পেনসিল সার্পনারের মতো’—কোন্যন্ত্রের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : পালক কেটে কলম বানানোর জন্য সাহেবরা একটা ছোটো যন্ত্র বানিয়েছিলেন, যার মধ্যে পালক ঢুকিয়ে চাপ দিলেই তৈরি হতো পালকের কলম। এখানে এই যন্ত্রের কথা বলা হয়েছে।

28. ‘কলম সেদিন খুনিও হতে পারে বইকী’— কলম কীভাবে খুনি হয়েছিল?
উত্তর : রোমের অধীশ্বর জুলিজু য়াস সিজার তাঁর ব্রোঞ্জের কলম বা স্টাইলাস দিয়ে কাসকাকে আঘাত করে হত্যা করেছিলেন, সেইদিন কলম খুনির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল।

29. অষ্টাদশ শতকে চার খণ্ড রামায়ণ কপি করে একজন লিপিকার কী কী পেয়েছিলেন?
উত্তর : অষ্টাদশ শতকে একজন লিপিকার চার খণ্ড রামায়ণ কপি করে পেয়েছিলেন নগদ সাত টাকা কিছু কাপড় আর মিষ্টি।

30. দুজন সাহিত্যিকের নাম করো যাদের নেশা ছিল ফাউন্টেন পেন সংগ্রহ করা।
উত্তর : দুজন বিখ্যাত সাহিত্যিক শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় এবং শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ছিল ফাউন্টেন পেন সংগ্রহের নেশা।

31. সমানি সম শীর্ষাণি ঘনানি বিরলানি চ’ কথাটির বাংলা অর্থ কী?
উত্তর : সব অক্ষর সমান, প্রতিটা ছত্র সুশৃঙ্খল ও পরিচ্ছন্ন।

32. ‘তিনি আউড়ে চলেছেন’—কে কী আউড়ে চলেছেন?
উত্তর : কলেজ স্ট্রিটের কলমের দোকানদার লেখকের সামনে দাম সহ একাধিক কলমের নাম, যথা-পার্কা র, শেফার্ড, ওয়াটারম্যান, সোয়ান প্রভৃতি আউড়ে চলেছেন।

33. বাংলা মুলুকে রাজা-জমিদারেরা ক্যালিগ্রাফিস্ট বা লিপি কুশলীদের কেমন সম্মান দিতেন?
উত্তর : বাংলা মুলুকে রাজা-জমিদারেরা লিপিকুশলীদের গুণী বলে সম্মান করতেন এবং তাদের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করতেন।

34. লেখক শ্ৰীপাথ ছোটোবেলায় কীসে ‘হোম-টাস্ক’ করতেন?
উত্তর : লেখক শ্রীপান্থ ছোটোবেলায় কলাপাতাকে কাগজের মতো সাইজ করে কেটে নিয়ে তার উপর ‘হোম-টাস্ক’ করতেন।

35. ‘আমরা ফেরার পথে কোনও পুকুরে তা ফেলে দিয়ে আসতাম’—বক্তা কেন তা পুকুরে ফেলে দিতেন?
উত্তর : প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী অক্ষরজ্ঞানহীন গোরুকে অক্ষর খাওয়ানো পাপ। তাই অমঙ্গলের ভয়ে মাস্টারের দেখে ফেরত দেওয়া হোমটাস্কের কলাপাতাগুলি প্রাবন্ধিকেরা পুকুরে ফেলে দিয়ে আসতেন।

36. ‘তাই নিয়ে আমাদের প্রথম লেখালেখি’ — কী নিয়ে লেখকদের প্রথম লেখালেখি?
উত্তর : বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি কলম, মাটির দোয়াত, লেখার জন্য কলাপাতা আর হাতে তৈরি কালি দিয়েই লেখকদের প্রথম লেখালিখি।

37. ‘দোয়াত যে কত রকমের হতে পারে’—প্রবন্ধে উল্লিখিত বিভিন্ন প্রকার দোয়াতের নাম লেখো।
উত্তর : কাঁচ, পোর্সেলিন, শ্বেতপাথর, পিতল, ব্রোঞ্জ, ভেড়ার সিং, সোনা সহ নানা ধরনের দোয়াতের কথা প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন।

38. দোকানদার লেখককে কলম বিক্রি করার আগে কী জাদু দেখিয়েছিলেন?
উত্তর : দোকানদার লেখকের কাছে একটি সস্তার জাপানি পাইলট বিক্রির আগে সেটি কাঠের বোর্ডে ছুঁড়ে মারলেও কলমের নিবটি অক্ষত ছিল। এভাবেই তিনি সস্তা কলমের টেকসই হওয়ার জাদু দেখান।

39. কলকাতার ইতিহাসেও এ ধরনের ‘ডুয়েল’ বা ‘দ্বৈরথের কাহিনি রয়েছে’—কোন্ধরনের কাহিনির কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : পালকের কলমধারীকে তলোয়ার হাতে লড়াই করতে হচ্ছে ক্রুর কিংবা মিথ্যাচারী প্রতিপক্ষের সঙ্গে—এমন দ্বৈরথের কাহিনির কথা বলা হয়েছে।

40. ‘এই নেশা পেয়েছি আমি শরৎদার কাছ থেকে—কে কোন্নেশা পেয়েছেন?
উত্তর : বিখ্যাত লেখক শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় ফাউন্টেন পেন সংগ্রহের নেশাটি পেয়েছিলেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে।

41. ‘অবাক হয়ে সেদিন মনে মনে ভাবছিলাম’— কে কী ভাবছিলেন?
উত্তর : সুভো ঠাকুরের দোয়াত সংগ্রহ দেখে প্রাবন্ধিক ভেবেছিলেন যে, এইসব দোয়াতের কালি দিয়েই ইংরেজি, সংস্কৃত এবং বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত লেখকদের তাঁদের অমর রচনাগুলি লিখে গিয়েছেন।

42. ‘জন্ম নিল ফাউন্টেন পেন’—ফাউন্টেন পেন কীভাবে জন্ম নিল?
উত্তর : ব্যবসার চুক্তিপত্রে দোয়াতের কালি উল্টে পড়ায় লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান চুক্তিপত্র পাকা করতে ব্যর্থ হন—এই ঝামেলার হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য পরবর্তীকালে তিনি ফাউন্টেন পেনের জন্ম দিয়েছিলেন।

43. ‘তাতে লিখে আমার সুখ নেই’—কোন্প্রসঙ্গে এ মন্তব্য?
উত্তর : নিজের কলমে না লিখে, অন্যের কাছ থেকে ধার করে নেওয়া ‘গলা শুকনো ভোঁতা মুখ’ কলম দিয়ে প্রাবন্ধিকের সুখ নেই।

44. ‘অক্ষরজ্ঞানহীনকে লোকে বলে – লোকে কী বলে?
উত্তর : অক্ষরজ্ঞানহীনকে লোকে বলে, ওর কাছে ‘ক’-অক্ষর গোমাংস।

45’তাদের বাহারি সব নাম’ — নামগুলি কী কী?
উত্তর : জনপ্রিয় বিভিন্ন দোয়াত কালির নামগুলি হল ‘কাজল কালি’, ‘সুলেখা’ ইত্যাদি।

46. স্টাইলাস কী?
উত্তর : লেখার জন্য ব্যবহৃত ব্রঞ্জের শলাকার পোশাকি নাম হল স্টাইলাস।

47. ‘সেটা অবশ্য ইচ্ছাকৃত নয়’—কোনটা অনিচ্ছাকৃত?
উত্তর : অনেকে চুলে কলম ধারণ করে, প্রাবন্ধিকের মতে সেটা অনিচ্ছাকৃত।

48. “কালগুণে বুঝিবা আজ আমরাও তা-ই।”—কালগুণে আমাদের অবস্থা কেমন হয়ে উঠেছে বলে লেখকের অভিমত?
উত্তর : কালি-কলমহীন কেরানি বা লেখক হওয়ার জন্য প্রবন্ধকার এ কথা বলেছেন। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, আজকাল লিখতে গেলে কালিকলমের প্রয়োজন হয় না, কম্পিউটারই সব করে দিতে পারে।

49. “তাঁরা হয়তো বুঝবেন কলমের সঙ্গে আমাদের কী সম্পর্ক।”—‘তাঁরা’ কারা?
উত্তর : ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে লেখক ‘তাঁরা’ বলতে বুঝিয়েছেন লেখকের শৈশব ও কৈশোরের সময়ের বা তারও আগের বাংলার পাড়াগাঁয়ের মানুষদের কথা।

50. “আমরা কলম তৈরি করতাম।”—কী দিয়ে কীভাবে কলম তৈরি করা হত?
উত্তর : ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধ থেকে উদ্ধৃত এই অংশে লেখক জানিয়েছেন যে, তাঁরা ছেলেবেলায় রোগা বাঁশের কঞ্চি কেটে, তার মুখটি চিরে নিয়ে কলম তৈরি করতেন।

51. ‘ বাংলায় একটা কথা চালু ছিল— কথাটি কী ?
Ans: পাঠ্য রচনা অনুসারে চালু কথাটি হল , ‘ কালি নেই , কলম নেই , বলে আমি মুনশি । 

52. ‘ তখন মনে কষ্ট হয় বই কী ! — কখন মনে কষ্ট হয় ?
Ans: ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ রচনা অনুসারে লেখকদের প্রথম লেখালেখির সূত্রপাত ঘটেছিল বাঁশের কলম , মাটির দোয়াত , ঘরে তৈরি কালি আর কলাপাতায় । কিন্তু পরে সে – সমস্তই কালের নিয়মে হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম হলে তার মনে এমন অনুভূতি হয়েছিল ।


MCQ প্রশ্নোত্তর | হারিয়ে যাওয়া কালি কলম (প্রবন্ধ) শ্রীপান্থ – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Hariya Jawa Kali Kolom Question and Answer :

  • ‘ শ্রীপান্থ ‘ ছদ্মনামে লিখেছেন –
    • (A) সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • (B) সমরেশ বসু
    • (C) বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়
    • (D) নিখিল সরকার
      • Ans: (D) নিখিল সরকার
  • নীচের কোন্ বইটি শ্রীপাস্থের নয় —
    • (A) আজব দুনিয়া
    • (B) মিছিলনগরী
    • (C) আজবনগরী
    • (D) আনন্দনগরী
      • Ans: (C) আজবনগরী
  • লেখক যে – অফিসে কাজ করতেন , সেটি হল –
    • (A) সরকারি অফিস
    • (B) পত্রিকা অফিস
    • (C) সওদাগরি অফিস
    • (D) বেসরকারি অফিস
      • Ans: (B) পত্রিকা অফিস
  • লেখকের অফিসে সবাই –
    • (A) ফাঁকিবাজ
    • (B) লেখক
    • (C) ইঞ্জিনিয়ার
    • (D) গম্ভীর
      • Ans: (B) লেখক
  • লেখকের হাতে ছাড়া আর কারও হাতে কী নেই ?
    • (A) সময়
    • (B) ঘড়ি
    • (C) কাজ
    • (D) কলম
      • Ans: (D) কলম
  • লেখক ছাড়া তাঁর অফিসের আর সকলের সামনেই রয়েছে –
    • (A) ক্যালকুলেটর
    • (B) কম্পিউটার
    • (C) টাইপরাইটার
    • (D) টেলিফোন
      • Ans: (B) কম্পিউটার
  • লেখকের লেখাকে ভালোবেসে ছাপার জন্য তৈরি করে দেন –
    • (A) তাঁর অধস্তন কর্মচারী
    • (B) তাঁর বন্ধু
    • (C) তাঁর সহকর্মীরা
    • (D) তাঁর সহকারী
      • Ans: (C) তাঁর সহকর্মীরা
  • একদিন কোনো কারণে অফিসে কী নিয়ে যেতে ভুলে গেলে বিপদ ?
    • (A) চাবি
    • (B) কলম
    • (C) চশমা
    • (D) ঘড়ি
      • Ans: (B) কলম
  • কীসে লিখে লেখকের সুখ নেই ?
    • (A) কম্পিউটারে
    • (B) টাইপরাইটারে
    • (C) গলা – শুকনো ভোঁতা – মুখ কলমে
    • (D) ফাউন্টেন পেন – এ
      • Ans: (C) গলা – শুকনো ভোঁতা – মুখ কলমে
  • বাংলা প্রবাদটি হল — কালি নেই , কলম নেই , বলে আমি –
    • (A) কলমচি
    • (B) মুনশি
    • (C) লেখক
    • (D) মন
      • Ans: (D) মন
  • লেখক ছোটোবেলায় থাকতেন—
    • (A) গ্রামে
    • (B) শহরে
    • (C) মফস্সলে
    • (D) বিদেশে
      • Ans: (A) গ্রামে
  • লেখক জন্মেছেন ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধরচনার—
    • (A) ২০ – ২৫ বছর আগে
    • (B) ৩০ বছর আগে
    • (C) ৫০–৬০ বছর আগে
    • (D) ৭৫ বছর আগে
      • Ans: (D) ৭৫ বছর আগে
  • লেখকরা ছোটোবেলায় কলম তৈরি করতেন –
    • (A) পাখির পালক দিয়ে
    • (B) নলখাগড়া দিয়ে
    • (C) হাড় দিয়ে
    • (D) রোগা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে
      • Ans: (D) রোগা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে
  • কলমের কালি ধীরে ধীরে চুঁইয়ে পড়ার জন্য কী করণীয় ?
    • (A) কলমের মুখটা চিরে দিতে হবে
    • (B) কলমের মুখটা সাপ করতে হবে
    • (C) কলমের মুখটা ঘষে নিতে হবে
    • (D) কলমের মুখটা একটু ভোঁতা হতে হবে
      • Ans: (A) কলমের মুখটা চিরে দিতে হবে
  • লেখকরা হোমটাস্ক করতেন
    • (A) শুকনো তালপাতায়
    • (B) কলাপাতায়
    • (C) পদ্মপাতায়
    • (D) শালপাতায়
      • Ans: (B) কলাপাতায়
  • অক্ষরজ্ঞানহীনকে লোকে বলে –
    • (A) অশ্বের কীবা দিন কীবা রাত
    • (B) ক অক্ষর গোমাংস
    • (C) কুয়োর ব্যাং
    • (D) চোখ থাকতেও অন্ধ
      • Ans: (B) ক অক্ষর গোমাংস
  • ছোটোবেলার কালি তৈরি করতে লেখকদের সাহায্য করতেন—
    • (A) মা – পিসি – দিদিরা
    • (B) বাবা – কাকা – দাদারা
    • (C) স্কুলের মাস্টারমশাইরা
    • (D) বন্ধুবান্ধবরা
      • Ans: (A) মা – পিসি – দিদিরা
  • ত্রিফলা বলতে যে – তিনটি ফলকে বোঝায় , সেগুলি হল –
    • (A) হরীতকী , সুপারি , এলাচ
    • (B) হরীতকী , সুপারি , আমলকী
    • (C) বহেড়া , হরীতকী , আমলকী
    • (D) বহেড়া , সুপারি , আমলকী
      • Ans: (C) বহেড়া , হরীতকী , আমলকী
  • ছোটোবেলায় লেখকদের বাড়িতে রান্না হত
    • (A) গ্যাসে
    • (B) স্টোভে
    • (C) সৌর কুকারে
    • (D) কাঠের উনুনে
      • Ans: (D) কাঠের উনুনে
  • কাঠের উনুনে রান্নার ফলে কড়াইয়ের তলায় জমত—
    • (A) কালি
    • (B) তেল
    • (C) কাঠের গুঁড়ো
    • (D) ছাই
      • Ans: (A) কালি
  • কড়াইয়ের তলার কালি ঘষে তোলা হত –
    • (A) কচু পাতা দিয়ে
    • (B) শিউলি পাতা দিয়ে
    • (C) লাউ পাতা দিয়ে
    • (D) কুমড়ো পাতা দিয়ে
      • Ans: (C) লাউ পাতা দিয়ে
  • ছোটোবেলায় লেখকদের লেখালেখির প্রথম উপকরণগুলি ছিল –
    • (A) খাগের কলম , মাটির দোয়াত , ভূর্জপত্র , ভেষজ কালি
    • (B) পালকের কলম , তুলট কাগজ , কাচের দোয়াত , ঘরে বানানো কালি
    • (C) বাঁশের কলম , মাটির দোয়াত , কলাপাতা , ঘরে তৈরি কালি
    • (D) স্লেট , পেনসিল
      • Ans: (C) বাঁশের কলম , মাটির দোয়াত , কলাপাতা , ঘরে তৈরি কালি
  • লেখক প্রাচীন মিশরে জন্মালে কী দিয়ে লিখতেন ?
    • (A) বাঁশের কঞ্চি
    • (B) নলখাগড়ার কলম
    • (C) পালক
    • (D) হাড়ের কলম
      • Ans: (B) নলখাগড়ার কলম
  • লেখক প্রাচীন ফিনিসীয় হলে লেখার জন্য ব্যবহার করতেন—
    • (A) পালক
    • (B) স্টাইলাস
    • (C) হাড়
    • (D) নলখাগড়া
      • Ans: (A) পালক
  • ‘ স্টাইলাস ‘ আসলে কী ?
    • (A) প্ল্যাটিনাম শলাকা
    • (B) লৌহ শলাকা
    • (C) ব্রোঞ্জের শলাকা
    • (D) তামার শলাকা
      • Ans: (C) ব্রোঞ্জের শলাকা
  • সিজার কলম দিয়ে কাকে আঘাত করেছিলেন ?
    • (A) রোমুলাসকে
    • (B) কাসকাকে
    • (C) হেনরিয়েটাকে
    • (D) ডরোথিকে
      • Ans: (B) কাসকাকে
  • চিনারা চিরকাল লিখে আসছে –
    • (A) তুলিতে
    • (B) ব্রোঞ্জের শলাকাতে
    • (C) কুইলে
    • (D) খাগড়ার কলমে
      • Ans: (A) তুলিতে
  • জ্ঞানাঞ্জন শলাকা আসলে –
    • (A) কাজল পরার কাঠিবিশেষ
    • (B) কলম
    • (C) পেনসিল
    • (D) হাড় থেকে তৈরি পেনবিশেষ
      • Ans: (B) কলম
  • খাগের কলম একমাত্র দেখা যায় –
    • (A) নববর্ষের সময়
    • (B) সরস্বতী পূজার সময়
    • (C) পরীক্ষার সময়
    • (D) সরস্বতী পুজোর সময়
      • Ans: (B) সরস্বতী পূজার সময়
  • কাচের দোয়াতে কালির বদলে থাকে –
    • (A) জল
    • (B) রং
    • (C) মধু
    • (D) দুধ
      • Ans: (D) দুধ
  • কুইল হল –
    • (A) খাগের কলম
    • (B) খাগড়ার কলম
    • (C) পালকের কলম
    • (D) কঞ্চির কলম
      • Ans: (C) পালকের কলম
  • ‘ বাবু কুইল ড্রাইভারস ‘ কথাটি কাদের বলা হত ?
    • (A) গরম গরম ইংরেজি বলা বাঙালি সাংবাদিকদের
    • (B) সরল হিন্দি ভাষায় কথা বলা সাংবাদিকদের
    • (C) ভাঙা ভাঙা হিন্দিভাষী সাংবাদিকদের
    • (D) সাবলীল বাংলাভাষী সাংবাদিকদের
      • Ans: (A) গরম গরম ইংরেজি বলা বাঙালি সাংবাদিকদের
  • ‘ বাবু কুইল ড্রাইভারস ‘ কথাটি বলেছেন—
    • (A) লর্ড বেন্টিঙ্ক
    • (B) লর্ড কার্জন
    • (C) উইলিয়াম কেরি
    • (D) হেস্টিংস
      • Ans: (B) লর্ড কার্জন
  • পালকের কলম এখন দেখতে পাওয়া যায়
    • (A) পত্রিকার অফিসে
    • (B) সরস্বতী পুজোর সময়
    • (C) বিশ্বকর্মা পুজোর সময়
    • (D) পুরোনো দিনের তৈলচিত্র ফোটোগ্রাফে
      • Ans: (D) পুরোনো দিনের তৈলচিত্র ফোটোগ্রাফে
  • কার ছবিতে সামনে দোয়াতে গোঁজা পালকের কলম দেখা যায় ?
    • (A) দেবী সরস্বতীর
    • (B) রবীন্দ্রনাথের
    • (C) উইলিয়াম জোন্স কিংবা কেরি সাহেবের
    • (D) বিদ্যাসাগরের
      • Ans: (C) উইলিয়াম জোন্স কিংবা কেরি সাহেবের
  • লেখকের মতে তিনিই হলেন দার্শনিক , যিনি –
    • (A) দর্শনের অধ্যাপক
    • (B) কানে কলম গুঁজে দুনিয়া খোঁজেন
    • (C) চোখে চশমা এঁটে বই পড়েন
    • (D) ভাবের জগতে থাকেন
      • Ans: (B) কানে কলম গুঁজে দুনিয়া খোঁজেন
  • লেখক ছেলেবেলায় কাকে পায়ের মোজায় কলম রাখতে দেখেছিলেন ?
    • (A) মন্ত্রীমশাইকে
    • (B) দারোগাবাবুকে
    • (C) মাস্টারমশাইকে
    • (D) পণ্ডিতমশাইকে
      • Ans: (B) দারোগাবাবুকে
  • কোনো কোনো অতি আধুনিক ছেলে কোথায় কলম রাখে ?
    • (A) বুক পকেটে
    • (B) পাঞ্জাবির পকেটে
    • (C) কাঁধের ছোট্ট পকেটে
    • (D) পায়ের মোজায়
      • Ans: (C) কাঁধের ছোট্ট পকেটে
  • ‘ কায়স্থ ‘ আর ‘ রাজপুত ‘ – কে চেনা যায় যথাক্রমে –
    • (A) কলম ও গায়ের রঙে
    • (B) কলম ও গোঁফে
    • (C) আভিজাত্য ও গোঁফে
    • (D) দেশপ্রেম ও সত্যবাদিতায়
      • Ans: (B) কলম ও গোঁফে
  • কালির অক্ষর নাইকো পেটে , চন্ডী পড়েন –
    • (A) কালীঘাটে
    • (B) বাবুঘাটে
    • (C) গঙ্গাঘাটে
    • (D) খেয়াঘাটে
      • Ans: (A) কালীঘাটে

রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর| হারিয়ে যাওয়া কালি কলম (প্রবন্ধ) শ্রীপান্থ – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর ২০২৪| Madhyamik Bengali Hariya Jawa Kali Kolom Question and Answer 2024 :

1. আমি যেখানে কাজ করি সেটা লেখালিখির আপিস- সেই আপিসের চিত্র লেখক কীভাবে উপস্থাপিত করেছেন?

কম্পিউটারের ব্যবহার :আধুনিক যন্ত্রসভ্যতার সঙ্গে অতীতের তুলনা প্রসঙ্গে লেখক কিছুটা নস্টালজিক হয়ে পড়েছেন। সেই তুলনা এসকোই দেখিয়েছেন, তিনি যেখানে কর্মরত, সেখানকার বহু কর্মীই কম্পিউটারে লেখালেখির কাজ করছেন। সকলের সামনেই চৌকো আয়নার মতো একটা কাচের স্ক্রিন বা পরদা এবং তার নীচে টাইপরাইটারদের মতো একটা কি-বোর্ড। কি-বোর্ডের প্রতিটি বোতামে ছাপা আছে একটি করে হরফ।

লেখকেরা তা দিয়ে অনবরত লিখছেন এবং মাঝে মাঝে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখে নিচ্ছেন যে, সেগুলি সঠিকভাবে ফুটে উঠছে কি না। অর্থাৎ তাদের কাছে কলম নিষ্প্রয়োজন ঘরে কাজ বস্তুত পরিচ্ছন্ন, সুশৃঙ্খল এবং তার মুদ্রণ-সৌন্দর্য বেশ নজরকাড়া। কিন্তু লেখক যন্ত্রপ্রেমী নন। তাই সেখানে যেদিন তিনি কলম ছাড়া কাজে যেতেন, সেদিন হয়তো কারও কাছে তিনি কলম চাইতে গিয়ে দেখছেন, কলম নেই। অথবা, যাও-বা পেয়েছেন, তার অবস্থা খুবই সঙ্গীন। এজন্য তিনি বিস্মিত হয়ে ভেবেছেন, এটি ‘লেখকের কারখানা’, অথচ কারও কাছে কালিকলম নেই।

2. ‘আমার মনে পড়ে প্রথম ফাউন্টেন কেনার কথা – লেখক কোথায় ফাউন্টেন পেন কিনতে গিয়েছিলেন? তাঁর ফাউন্টেন পেন কেনার অভিজ্ঞতার বর্ণনা দাও।

উত্তর : শ্রীপান্থ তাঁর ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে প্রথম ফাউন্টেন পেন কেনার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তিনি কলকাতার কলেজস্ট্রিটের এক নামী দোকানে ফাউন্টেন কিনতে গিয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বেশ কয়েকবছর পরে শ্রী পান্থ যখন তাঁর প্রথম ফাউন্টেন পেনটি কিনতে যান, দোকানি তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন কী কলম তিনি কিনবেন এবং দাম সহ তাকে পার্কার, শেফার্ড, ওয়াটার ম্যান, সোয়ান, পাইলট ইত্যাদি পেনের নাম বলেছিলেন। ফাউন্টেন সম্পর্কে অনভিজ্ঞ প্রবন্ধিকের পক্ষে খুব দাম দিয়ে পেন কেনা সম্ভব নয় বুঝে অবশেষে তাঁকে একটি সস্তার জাপানি পাইলট নিতে বলেছিলেন। কলমটির নিব কেমন শক্ত তা বোঝাতে দোকানি কলমের খাপটা খুলে কলমটিকে ছুঁড়ে দিয়েছিলেন একটি কাঠের বোর্ডের গায়ে, ঠিক যেভাবে সার্কাসে একটি লোককে দাঁড় করিয়ে ছুরির খেলা দেখানো হয় সেভাবে। তারপর শ্রীপান্থ সেই জাপানি পাইলট নিয়ে ঘরে ফিরেছিলেন। সেটিই তাঁর প্রথম ফাউন্টেন।

3. ফাউন্টেন পেন বাংলায় কী নামে পরিচিত? নামটি কার দেওয়া? ফাউন্টেন পেনের জন্ম ইতিহাস লেখো।
অথবা, “কলমের দুনিয়ায় যা সত্যিকারের বিপ্লব ঘটায় তা ফাউন্টেন পেন” —ফাউন্টেন পেনের জন্ম বৃত্তান্ত সম্পর্কে যা জানো লেখো।
অথবা, “বিমর্ষওয়াটারম্যান মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলেন— আর নয়, এর একটা বিহিত তাঁকে করতেই হবে”— ওয়াটারম্যান কি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন? তার পরিণতি কী হয়েছিল?
অথবা, “একদিন অফুরন্ত এই কালির ফোয়ারা যিনি খুলে দিয়েছিলেন, তাঁর নাম লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান”— কী করে তিনি কালির ফোয়ারা খুলে দিয়েছিলেন, প্রবন্ধ অনুযায়ী লেখো।
অথবা, “জন্ম নিল ফাউন্টেন পেন”— ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কারক কে এই পেনের জন্ম বৃত্তান্তটি লেখো।

উত্তর : বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক নিখিল সরকার ওরফে শ্রীপান্থ রচিত “হারিয়ে যাওয়া কালি কলম” প্রবন্ধ অনুযায়ী ‘ফাউন্টেন পেন’ বাংলায় ‘ঝরনা কলম’ নামে পরিচিত।

ফাউন্টেন পেনের পূর্বনাম ছিল ‘রিজার্ভা র পেন’। পণ্ডিতদের মতে, কলমের দুনিদু য়ায় সত্যিকারের বিপ্লব ঘটিয়েছিল এই ফাউন্টেন পেন। ফাউন্টেন পেনের জন্ম ইতিহাসটি ছিল বড়ই অভিনব এবং চমকপ্রদ।

➫ আবিষ্কারক : লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান নামক জনৈক ব্যবসায়ী ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কার করেছিলেন। তাঁর এই আবিষ্কার বিশ্ববাসীর কাছে অফুরন্ত কালির ফোয়ারা খুলে দিয়েছিল।

➫ চুক্তিপত্র সাক্ষর : সেকালের অন্যান্য ব্যবসায়ীদের মতো তিনিও দোয়াত-কলম নিয়ে কাজে বের হতেন। তিনি একবার অন্য আর একজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে সাক্ষর করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু দলিল কিছুটা লেখা হওয়ার পর অসাবধানতাবশত দোয়াতে রাখা কালি চুক্তিপত্রের উপর উলটে পড়ে যায়। ফলে বাধ্য হয়ে ওয়াটারম্যানকে কালি সংগ্রহের জন্য বাইরে যেতে হয়। কিন্তু ফিরে এসে তিনি শোনেন যে–ইতিমধ্যেই আর-একজন তৎপর ব্যবসায়ী চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করে চলে গিয়েছেন।

➫ প্রতিজ্ঞা গ্রহণ : এই ঘটনায় বিমর্ষওয়াটারম্যান মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেন, এর একটা বিহিত তাঁকে করতেই হবে।

➫ যুগান্তকারী আবিষ্কার : দোয়াতে রাখা কালির জন্য এই দুর্ঘ দুটনার পুনরাবৃত্তি যাতে আর না ঘটে—এই ভাবনা থেকেই, নিজের জেদ এবং আত্মবিশ্বাসের উপর ভর করে পরবর্তীকালে তিনি ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কার করেছিলেন।

4. ‘কাল গুণে বুঝিবা আজ আমরাও তা-ই’ – এখানে কোন বিশেষ অবস্থার কথা বলা হয়েছে? এরকম অবস্থার কারণ কী?

উত্তর : বাংলায় একটা কথা চালু ছিল, ‘কালি নেই, কলম নেই, বলে আমি মুনশি’— ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে শ্রীপান্থ এই কথাটি উল্লেখ করে বলেছেন ‘কালগুণে বুঝিবা আজ আমরাও তা-ই।” একদিন লেখালেখির জন্য যে কলম অপরিহার্য ছিল কালক্রমে তার স্থান নিতে বসেছে কম্পিউটার। কলমের প্রয়োজনীয়তা ধীরে ধীরে অনেকটাই কমে গেছে। প্রাবন্ধিক দেখেছেন সকলে আজকাল কলম নিয়ে বের হন না। তাঁদের লেখালেখির অফিসেও একদিন যদি কোনও কারণে তিনি কলম নিয়ে যেতে ভুলে যান তবে কারো কাছ থেকে জুতসই কলম পান না। যদিও বা কারও কাছে কলম মেলে, তার গলা শুকনো, মুখ ভোঁতা, লিখে সুখ হয়না। দায়সারা ভাবে কোনোমতে সেদিনকার কাজ সারতে হয়। কিন্তু সেই অফিস লেখালেখির অফিস, লেখকের কারখানা। আগে বলা হত, ‘কালি নেই, কলম নেই, বলে আমি মুনশি’ অর্থাৎ মুনশির জন্য কালি-কলম ছিল অপরিহার্য, একালে আর তা নেই। কিন্তু প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ কলমের উপরেই একান্ত নির্ভরশীল। তাই কলম না নিয়ে গেলে তিনি বিপন্ন ও অসহায় বোধ করেন। এ কারণেই এই কথাটি তিনি বলেছেন।

5. “সব মিলিয়ে লেখালেখি রীতিমতো ছোটোখাটো একটা অনুষ্ঠান — উক্তিটির প্রাসঙ্গিকতা ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : সুসাহিত্যিক শ্রীপান্থ (নিখিল সরকার) প্রণীত “হারিয়ে যাওয়া কালি কলম” প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক নিজস্ব অভিজ্ঞতার আলোকে কালি কলমের বিবর্তনের ইতিহাস আমাদের সামনে উপস্থাপন করেছেন। সেই সূত্রেই তিনি জানিয়েছেন —

  1. কলম নির্মাণ : রোগা বাঁশের কঞ্চিকে বিশেষ নিয়মে কেটে তিনি ছোটোবেলায় কলম নির্মাণ করতেন।
  2. খাতা তৈরি : কলাপাতাকে সমান মাপে কেটে তিনি তৈরি করতেন স্কুলের হোম টাস্কের খাতা।
  3. কালি তৈরি : মা-দিদিদের সহযোগিতায় নিজেই বাড়িতে তৈরি করতেন কালি।
  4. ফাউন্টেন পেনের ব্যবহার : হাইস্কুলে ওঠার পর তিনি কঞি, খাগ বা পালকের কলমকে বাদ দিয়ে হাতে তুলে নেন ফাউন্টেন পেন। এই ফাউন্টেন পেনগুলিকে টেকসই ও পোক্ত করার জন্য নানা অভিনব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হত।
  5. রেডিমেড কালির আমদানি : লেখালেখির প্রক্রিয়াকে আরও সুগম করার জন্য এরপর বাজারে এল দোয়াতে তৈরি রেডিমেড কালি এবং কালি তৈরির বড়ি।
  6. লেখা শুকনো : কলম দিয়ে লেখার পর সেই লেখাকে শুকানোর জন্য প্রথমদিকে ব্যবহার করা হত বালি, পরবর্তীকালে এল ব্লটিং পেপার। অনুষ্ঠানের আগে যেমন বিরাট আয়োজনের প্রয়োজন হয়, তেমনি লেখালেখির জন্য এই আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজন ছিল সত্যিই একটা ছোটোখাটো অনুষ্ঠানের সমতুল্য।

6. মুগল দরবারে একদিন তাঁদের কত না খাতির, কত না সম্মান”— তাঁদের বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে? তাঁদের খ্যাতি ও সম্মানের পরিচয় দাও।
অথবা, “যাঁরা ওস্তাদ কলমবাজ তাঁদের বলা হল ‘ক্যালিগ্রাফিস্ট’ বা লিপি-কুশলী” প্রবন্ধ অবলম্বনে ক্যালিগ্রাফিস্ট বা লিপিকুশলীদের পরিচয় দাও।
অথবা, “আমাদের এই বাংলা-মুলুকেও রাজা-জমিদাররা লিপি-কুশলীদের গুণী বলে সম্মান করতেন”–লিপি-কুশলীদের কাজ কী? তাঁদের সম্পর্কে প্রবন্ধে যা জানা যায় তা লেখো।

উত্তর : বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক নিখিল সরকার ওরফে শ্রীপান্থ রচিত হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধ থেকে প্রদত্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।

প্রদত্ত অংশে “তাঁদের” বলতে ক্যালিগ্রাফিস্ট বা লিপিকুশলীদের কথা বলা হয়েছে।

লিপি-কুশলীদের পরিচয় : ক্যালিগ্রাফিস্ট বা লিপি-কুশলীদের কাজ হল পুঁথি নকল করা। প্রাবন্ধিকের কথায় এরা হলেন “ওস্তাদ কলমবাজ”। তাছাড়া —

  1. সম্মানের অধিকারী : ক্যালিগ্রাফিস্টদের সম্মানের আসন পাতা ছিল সুপ্রাচীনকাল থেকেই। মোগল দরবার থেকে ছাপাখানাহীন বিশ্বদরবার— সর্বত্রই ছড়িয়ে ছিল তাদের খ্যাতি ও সম্মান। এমনকি বাংলার রাজা-জমিদাররাও লিপি-কুশলীদের গুণীর মর্যাদা দিয়ে তাঁদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতেন।
  2. মনোহর অক্ষরসজ্জা : সাধারণ গৃহস্থেরাও লিপি-কুশলীদের দিয়ে পুঁথি নকল করাতেন। সেই সব পুঁথির অক্ষর বিন্যাস ছিল মনোমুগ্ধকর। সব অক্ষর সমান, প্রতিটি ছত্র সুশৃঙ্খল পরিচ্ছন্ন’-এককথায় মুক্তোর মতো হস্তাক্ষর।
  3. স্বল্প উপার্জন : নিজেদের শ্রম এবং নিষ্ঠা বলে ক্যালিগ্রাফিস্টেরা অক্ষরসজ্জাকে শিল্পে উন্নীত করলেও তাদের আর্থিক উপার্জন ছিল অতি সামান্য। এ প্রসঙ্গে প্রাবন্ধিক জানিয়েছেন –
    (i) অষ্টাদশ শতকে চার খণ্ড রামায়ণ কপি করে একজন লিপি-কুশলী পেয়েছিলেন মাত্র সাত টাকা এবং কিছু কাপড় আর মিঠাই।
    (ii) উনিশ শতকে মাত্র বারো আনার বিনিময়ে ৩২০০ অক্ষর লেখানো যেত।
  4. সদা সতর্ক : পুঁথি যাতে কেউ চুরি করতে না পারে, সে বিষয়ে গর্বিত লিপি-কুশলীর৷ ছিলেন সদা সতর্ক।
    —কালের নিয়মে লিপি-কুশলীরা বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে গেলেও, তাদের লিপিশিল্প আজও স্বমহিমায় ভাস্বর।

7. ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে কালি কলমের প্রতি প্রাবন্ধিকের যে ভালোবাসার প্রকাশ পেয়েছে তা আলোচনা করো।
অথবা, ‘তাঁরা হয়তো বুঝবেন কলমের সঙ্গে আমাদের কী সম্পর্ক’ কারা বুঝবেন? সেই সম্পর্কটি কেমন ছিল?

উত্তর : বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক শ্রীপান্য রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে কালি ও কলমের প্রতি লেখকের অকৃত্রিম ভালোবাসার স্মৃতিমেদুরদু ছবি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। যথা —

  1. কালি কলমকে আঁকড়ে ধরে থাকা : প্রাবন্ধিক লেখালেখির অফিসে চাকরি করতেন, সেখানে সবাই কম্পিউটারে টাইপ করতে অভ্যস্ত হলেও তিনি কলমকে ছাড়তে পারেননি। কালি-কলমের প্রতি অদম্য ভালোবাসাই তাঁকে কম্পিউটারের কিবোর্ডে হাত দিতে বাধা দিয়েছে।
  2. কালি কলমের প্রতি আবাল্য টান : কালি কলমের প্রতি শৈশব থেকেই লেখকের এক অদম্য আকর্ষণ। সেই আকর্ষণেই তিনি কঞি কেটে কলম তৈরি করেন এবং বাড়িতে বসে কালি তৈরি করতেন।
  3. জন্ম-জন্মান্তরের ভালোবাসা : লেখক অকপটে স্বীকার করেছেন, তিনি যিশুখ্রিস্ট্রের জন্মের বহু আগে জন্মালেও কালি কলমের প্রতি তাঁর টান থাকত প্রবল।
  4. কালি সম্পর্কে নানা তথ্য সংগ্রহ : গোটা প্রবন্ধ জুড়েজু আমরা দেখি প্রাবন্ধিক বিভিন্ন কলম, নানাবির্তন, কলমের বিজ্ঞাপন, কলমের ফেরিওয়ালার কথা, কলমের ইতিহাস, কালির নিবের বৈচিত্র্য, দোয়াতের কথা তথ্যনিষ্ঠভাবে তুলে ধরেছেন। কালি কলমকে ভালোবাসতেন বলেই তিনি এসব তথ্য নিজের নখদর্পণে রেখেছিলেন।
  5. কালি কলমের অবলুপ্তিতে কষ্ট পাওয়া : প্রযুক্তির উপহার কম্পিউটারের থাবায় আজ কালি কলম তার প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে–এ ঘটনা লেখককে বেদনাবিধুর করে তুলেছে।
    — এভাবেই গোটা প্রবন্ধে কালি আর কলমের প্রতি মসিপ্রেমী লেখকের স্মৃতিবিজড়িত অকৃত্রিম ভালোবাসা প্রস্ফুটিত হয়েছে।

8. ‘মনে মনে আমি সেই ফরাসি কবির মতো বলেছি’ লেখক ফরাসি কবির মতো কী বলেছেন? তাঁর সেকথা বলার কারণ কী?

উত্তর : ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে শ্রীপান্থ জনৈক ফরাসি কবির একটি উদ্ধৃতি উল্লেখ করেছেন সেটি হল, ‘তুমি সবল, আমি দুর্বল। তুমি সাহসী, আমি ভীরু। তবু যদি আত্মমাকে হত্যা করতে চাও, আচ্ছা তবে তাই হোক। ধরে নাও আমি মৃত৷’ এই প্রবন্ধে শ্রীপান্থ কালি-কলমের ধারাবাহিক বিবর্তনের কথা বলেছেন। ছোটোবেলায় তিনি বাঁশের কঞ্চি কেটে তা দিয়ে কলম বানাতেন, কড়াইয়ের তলায় যে কালি পড়তো তা লাউপাতায় মুছে কালি তৈরি করতেন। লিখতেন কলাপাতায়। কালক্রমে দোয়াত, কালি এবং আধুনিক ফাউন্টেন পেনের ব্যবহারে তিনি অভ্যস্ত হয়েছিলেন। প্রবন্ধের এই অংশে তিনি জানিয়েছেন তিনি ‘কালি-খেকো’ কলমের ভক্ত। কিন্তু তাই বলে ফাউন্টেনপেন বা বলপেনের সঙ্গে তাঁর কোনো বিবাদ নেই। বরং সেই সময়ে বলপেনের প্রচলন হওয়ায় তিনি তার কাছে আত্মসমর্পন করেছিলেন। কারণ কালের পরিবর্তনশীলতাই কালের নিয়ম। পুরনো চলে যায় নতুন আসে, সেই নতুনকে স্বাগত জানাতে হয়। তাই প্রাবন্ধিক ও তাঁর কালি-খেকো’ কলমকে আঁকড়ে ধরে থাকতে পারেননি। এই প্রসঙ্গেই তিনি কৌতুক করে ফরাসি কবির এই উদ্ধৃতিটি প্রয়োগ করেছেন। এখানে ‘তুমি’ নতুন সময়ের নতুনকলম, আর ‘আমি’ লেখকের আবেগ, মমত্বের সঙ্গে জুড়ে থাকা পুরোনো কলম। কালের নিয়মে সেই পুরনো কলম এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। এই জন্যেই শ্রীপান্থ একথা বলেছেন।

9. ‘কলমকে বলা হয় তলোয়ারের চেয়েও শক্তিধর’ বিভিন্ন প্রকার কলমের পরিচয় দাও। উক্তিটির তাৎপর্য কী?

উত্তর : ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধ প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ কলমের ধারাবাহিক বিবর্তনের ইতিহাসের কথা বলেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন প্রাচীনকালে কলম হিসাবে মানুষ ব্যবহার করতো নলখাগড়া, হাড়, ধাতুর শলাকা, পাখির পালক ইত্যাদি। লেখক স্বয়ং বাঁশের কঞ্চি কেটে কলম বানিয়ে তা ব্যবহার করতেন। তারপর ইয়েলো কলম, রিজার্ভার পেন, ঝরনা কলম আর এখন আমরা যেমন ব্যবহার করি আধুনিক পেন। এই প্রবন্ধে বিভিন্ন ধরনের ঝরনা কলম বা ফাউন্টেন পেনের কথা বলেছেন শ্রীপান্থ। কোনো কলমের নিব তৈরি হত গরুর শিং দিয়ে, কখনও তা তৈরি হত কচ্ছপের খোল দিয়ে। নিবের মুখে বসানো হত হিরে। প্লাটিনাম, সোনা ইত্যাদি দিয়ে মুড়ে পোক্ত বানানো হতো ফাউন্টেন পেনকে। প্রবন্ধটিতে আমরা জানতে পারি পার্কার, শেফার্ড, ওয়াটারম্যান, পাইলট ইত্যাদি নামিদামি ফাউন্টেন পেনের কথাও।

➫ এই প্রচলিত ইংরেজি প্রবাদটির বাংলা অনুবাদ দাঁড়ায় ‘কলম তলোয়ারে চেয়েও শক্তিধর।’ এই প্রবাদটিতে কলম বলতে ব্যক্তিবিশেষের রচনাকে বোঝানো হয়েছে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় কলমের জোরেই অনেক গদি উল্টেছে, অনেক রাষ্ট্রবিপ্লব সংঘটিত হয়েছে। দেশকালের সীমা পেরিয়েও তা প্রেরিত করতে পারে মানুষকে। অস্ত্র অর্থাৎ পেশিশক্তি যা পারেনি তা পেরেছে কলম। এই তাৎপর্য বহন করেছে ‘কলম তলোয়ারে চেয়েও শক্তিধর’— এই প্রবাদটি।

10. “দোয়াত যে কত রকমের হতে পারে, না দেখলে বিশ্বাস করা শক্ত”রকমের দোয়াতের কথা বলেছেন বক্তা? বিভিন্ন প্রকার দোয়াত সম্পর্কে তিনি যে তথ্য দিয়েছেন তা আলোচনা করো।
অথবা
“তোমার সোনার দোয়াত কলম হোক”– সোনার দোয়াত প্রাবন্ধিক কোথায় দেখেছিলেন? দোয়াত সম্পর্কে প্রবন্ধে তিনি যে তথ্যগুলি তুলে ধরেছেন তা আলোচনা করো।

উত্তর : প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ তাঁর “হারিয়ে যাওয়া কালি কলম” প্রবন্ধে প্রাসঙ্গিকভাবেই বিভিন্ন ধরনের দোয়াতের কথা উত্থাপন করেছেন। যেমন—কাঁচের, কাট-গ্লাসের, পোর্সেলিনের, শ্বেতপাথরের, জেডের, পিতলের, ব্রোঞ্জের, ভেড়ার শিংয়ের, এমনকি সোনারও।

প্রাবন্ধিক তাঁর ছেলেবেলায় দেখেছেন, পরীক্ষায় সাফল্য লাভ করলে প্রবীণেরা আশীর্বাদ করে বলতেন—“বেঁচে থাকো বাছা, তোমার সোনার দোয়াত কলম হোক”। আক্ষরিক অর্থেই যে সোনার দোয়াত হয়, তা তিনি পরবর্তীকালে সুভো ঠাকুরের বিখ্যাত দোয়াত সংগ্রহশালায় দেখতে গিয়ে প্রত্যক্ষ করেছিলেন। তা ছাড়া –

(ক) দোয়াতের বৈচিত্র্য : তিনি লক্ষ্য করেছিলেন—কোনো কোনো দোয়াতে সুনিপুণ ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ইতিহাস ও সাহিত্যের নানা চরিত্রদের।

(খ) প্রাবন্ধিকের কল্পনা : বৈচিত্র্যময় নানা দোয়াতের সমাহার দেখে অবাক হয়ে তিনি সেদিন ভেবেছেন—শেকসপিয়ার, দান্তে, মিল্টন, কালিদাস, ভবভূতি, কাশীরাম দাস, কৃত্তিবাস থেকে রবীন্দ্রনাথ, বঙ্কিমচন্দ্র, শরৎচন্দ্র অর্থাৎ ইংরেজি, সংস্কৃত এবং বাংলা সাহিত্যের স্বনামধন্য নক্ষত্রেরা একদা এই দোয়াতের কালি দিয়ে নিজেদের অমর সাহিত্য সম্ভার রচনা করেছিলেন।

—যদিও অতীতের সোনালি গৌরব কেমন করে দোয়াত আজ বিলুপ্তির পথে—এগুলি এখন নিতান্তই ঘর সাজাবার শৌখিন উপকরণ

Join WhatsApp Group

Join Telegram Channel

× close ad